নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক লুটের চেষ্টা দুষ্কৃতীদের। ঘটনা শহরতলির ফুলবাড়ির। ব্যাঙ্কের পিছনের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে দলটি। কিন্তু ভল্ট খুঁজে পায়নি দুষ্কৃতীরা। অগ্যতা চারটি কম্পিউটারের মনিটর, ব্যাঙ্কের সাতটি বায়োমেট্রিক মেশিন এবং একটি ট্যাব নিয়ে তারা চম্পট দেয়। তবে এই দুষ্কৃতী হানার পিছনের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে পুলিস মহলেই। তদন্তকারীদের একাংশ এটিকে নিছকই মাদকাসক্তদের কাজ বলে মনে করছেন। অন্যদিকে, কোনও নথি গায়েব করার জন্য ব্যাঙ্ককর্মীদের মাধ্যমে কারোর অঙ্গুলিহেলনে এই দুষ্কৃতী হানা ঘটানো হল কি না, সেটা সন্দেহ করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, মাদকাসক্তদের ব্যাঙ্কে ঢুকে চুরি করার ঘটনা সংখ্যা নেহাতই হাতেগোনা। তাই রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়া অবধি ব্যাঙ্ককর্মীদেরও আঁতশ কাঁচের নীচে রাখা হচ্ছে।
গত শুক্রবার ১০জানুয়ারি ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার সকালে ব্যাঙ্কের দরজা খোলার পরেই লুটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপরেই দ্রুত খবর দেওয়া হয় নিউ জলপাইগুড়ি থানায়। পুলিস এসে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ব্যাঙ্কের সিসিটিভি ফুটেজে দুই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। সেই সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি(পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা ওই ব্যাঙ্কের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনার তদন্ত করছি। সবদিক খতিয়ে ঘটনাটি তদন্ত চলছে।
পুলিস সূত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে শনিবার রাত ১১টা ৮মিনিট নাগাদ দুই দুষ্কৃতী ব্যাঙ্কের পিছনের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। তাদের হাতে শাবল ছিল। ব্যাঙ্কে ঢুকে প্রথমে তারা চারিদিক ভালোভাবে ঘুরে দেখে। ব্যাঙ্কে থাকা বায়োমেট্রিক মেশিনগুলোর মধ্যে আঙুল দিয়ে পরখও করে তারা। এদিকওদিক ঘুরে টাকার সন্ধান না পেয়ে কম্পিউটারের মনিটর খুলে নেয় দুষ্কৃতীরা। এরপর সেখানে রাখা একটি ট্যাবে নজর পড়ে তাদের। সেটি উঠিয়ে নেওয়ার পর একে একে সাতটি বায়োমেট্রিক মেশিন খুলে নেয় দুষ্কৃতীরা। একাধিক ঘরে উঁকিঝুঁকির পর ফের ব্যাঙ্কের পিছনের দিকের সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে যায় দুই দুষ্কৃতী। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে দুই দুষ্কৃতীর মুখ আদ্যোপান্ত মাফলার জাতীয় কাপড়ে ঢাকা ছিল। শুধু চোখ দুটো ছিল খোলা। একজন সাদা, অন্যজন কালো জ্যাকেট পড়েছিল। দুজনের পড়নে জিনস ও পায়ে স্যাণ্ডেল ছিল। কালো জ্যাকেট পরিহিত দুষ্কৃতীর পিঠে একটি ব্যাগ ছিল। দুটি ছবি দেখে একাধিক এলাকায় নিজেদের সোর্সকে কাজে লাগিয়ে নাগাল পেতে চেষ্টা করছে পুলিস।