ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ফসিলসের প্রাক্তন বেসিস্ট চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের
এই সময় | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
ফসিলসের প্রাক্তন বেসিস্ট চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল রবিবার সন্ধ্যায়। কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটের ভাড়া বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়।
সূত্রের খবর, এ দিন বাড়িতে একাই ছিলেন চন্দ্রমৌলি। তাঁর বাবা-মা বাড়ি ছিলেন না। চন্দ্রমৌলির দেহ প্রথম দেখতে পান তাঁর বন্ধু মহুল চক্রবর্তী। মহুল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সকাল থেকেই তিনি ফোনে পাচ্ছিলেন না চন্দ্রমৌলিকে। ফোন বেজে বেজে কেটে যাচ্ছিল। চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাই অন্য এক বন্ধুকে সঙ্গে বিকালে যান চন্দ্রমৌলির বাড়িতে। সেখানে গিয়েই তিনি চন্দ্রমৌলিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন।
চন্দমৌলির এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত গায়ক সিধু। এই সময় অনলাইনকে সিধু বলেছেন, ‘আমরা একটা সময় একসঙ্গে প্রচুর কাজ করেছি। 'আমরা হারি না, হারতে পারি না’ বলে একটা গান বানিয়েছিলাম। গানের এই কথাটা আমাদের বিশ্বাস করা উচিত ছিল। চন্দ্র হয়তো সেটা আর বিশ্বাস করতো না। নিশ্চিত জানি না, তবে আমি শুনেছি যে ও মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। তার জন্য চিকিৎসাও চলছিল ওঁর। ফসিলস থেকে বেরিয়ে আসার পর ‘গোলক’ নামে একটি ব্যান্ড তৈরি করেছিলেন চন্দ্রমৌলি এবং তাঁর কয়েক জন সতীর্থ।
এ প্রসঙ্গে সিধু বলেন, ‘ভাল করছিল ওরা। ৭-৮টা গানির অ্যালবাম তৈরি করেছিল ওরা। সাধারণত এমন কেউ করে না। কিন্তু ওরা বাংলার প্রথম সারির ব্যান্ডগুলির স্ট্যান্ডার্ড বজায় রেখে গান তৈরি করেছিল। তবে বর্তমানে ব্যান্ডগুলি জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তেমনই চন্দ্রমৌলিদের ব্যান্ড ‘গোলক’ও বিশেষ প্রচারের আলো পায়নি। সেটা হয়তো চন্দ্রমৌলিকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। ওর এক ব্যান্ড মেম্বার এই দুঃসংবাদ শোনার পর কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, চন্দ্র ভীষণ ভাবে কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু কাজ পেল না, কাজ করতে পারল না বলে অভিমান করে চলে গেল।’
রবিবার কল্যাণীতে অনুষ্ঠান ছিল ফসিলসের। সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে চন্দ্রমৌলির মৃত্যুর খবর পৌঁছয় ফসিলসের সদস্যদের কাছে। অনুষ্ঠান শুরুর আগে থমথমে মুখে একে একে স্টেজে এসে দাঁড়ান রূপম ইসলাম সহ ফসিলসের বাকি সদস্যরা। স্টেজে থাকা বড় স্ক্রিনে তখন চন্দ্রমৌলির ছবি। প্রথম নীরবতা ভাঙেন রূপম। দর্শকের উদ্দেশে তিনি বলেন, '২১ বার এই মঞ্চে আমরা অনুষ্ঠান করেছি। তার মধ্যে ১৬ বার যিনি আমাদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁর ছবি পিছনের স্ক্রিনে রয়েছে। আমরা এখানে আসার সময় গাড়িতে একটা খবর পেয়েছি। এবং সেই খবরটা বজ্রাঘাতের মতো আমাদের মাথার উপর আছড়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ গান গাইতে পারে না। কারও হাতে বাদ্যযন্ত্র বেজে ওঠে না। কিন্তু বাংলার রক জনতা আমাদের সামনে আছে। এবং এই বাংলা রক জনতার খোঁজ আমরা একসঙ্গে করেছিলাম। একটা দীর্ঘ সময় জুড়ে চন্দ্র আমাদের সঙ্গী ছিল। আজ বলতে দ্বিধা নেই ওর সঙ্গেই আমার সবচেয়ে বেশি বন্ধুত্ব ছিল। গত বছর পর্যন্ত আমাদের যোগাযোগ ছিল।' সদ্য প্রয়ায় প্রাক্তন সতীর্থ চন্দ্রমৌলি সম্পর্ক আরও কিছু কথা বলে গানের অনুষ্ঠান শুরু করেন রূপম। প্রসঙ্গত, চন্দ্রমৌলির মৃত্যুর খবর পেয়েই এই সময় অনলাইন যোগাযোগ করেছিল রূপমের সঙ্গে। কিন্তু কোনও উত্তর পাওয়া যায় নি।