• ‘ডিপ্রেশনের আগুনে ফিনিক্স পাখির মতো ধেয়ে যায় চন্দ্রমৌলি’, শিল্পী জীবনের অবসাদ নিয়ে সিধু
    এই সময় | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • রবিবার সন্ধ্যায় আসে খবরটা। কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটের ভাড়া বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয় ‘ফসিলস’ বাংলা ব্যান্ডের প্রাক্তন বেসিস্ট চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের। এই খবরে মন ভেঙেছে সঙ্গীতানুরাগীদের। বিশেষ করে তাঁদের, যাঁরা ‘ফসিলস’, ‘ক্যাকটাস’-এর মতো বাংলা ব্যান্ডের গানের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন। সোশাল মিডিয়ার ফিডে পরপর ফুটে উঠেছে শোকবার্তা। এই সময় অনলাইন-এর সঙ্গে সেই সন্ধ্যাতেই কথা বলেন ‘ক্যাকটাস’ বাংলা ব্যান্ডের সিদ্ধার্থ রায় (সিধু)। সিধু জানিয়েছিলেন, মানসিক সমস‍্যায় ভুগছিলেন চন্দ্রমৌলি। ‘ফসিলস’ থেকে বেরিয়ে এসে ‘গোলক’ নামের ব্যান্ড তৈরি করেছিলেন সদ্য মৃত বেসিস্ট। কিন্তু সেই ব্যান্ড আশা অনুযায়ী সাড়া ফেলতে পারেনি। তাই-ই নাকি মনের ‘অসুখ’ করেছিল চন্দ্রমৌলির। অনর্গল বলে চলেন সিধু। কথা বলেন শিল্পীর জীবনের অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা নিয়ে। শোনে এই সময় অনলাইন।

    ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেছেন সিধু। নেশা ছিল গান। সেই নেশা গানই তাঁকে যাবতীয় পরিচিতি দিয়েছে। চন্দ্রমৌলির ডিপ্রেশন ও মৃত্যুকে নিজের মতো ব্যাখ্যা করেছেন ডাক্তার সিধু। বলেছেন, ‘গান কিংবা অন্য শিল্পচর্চায় খু-উ-উ-উ-ব কমন না হলেও ডিপ্রেশন একটি কমন লক্ষণ। এর কারণ মূলত দুটো। এক, আমি নিজেকে যে জায়গার যোগ্য বলে মনে করি, সেই জায়গা না পাওয়া। দুই, শীর্ষস্থানে পৌঁছে পরবর্তীতে জায়গা না ধরে রাখতে পারা। চন্দ্র ‘ফসিলস’-এর বেসিস্ট ছিল। যে কোনও কারণেই ব্যান্ড থেকে বেরিয়ে আসে। নিজের ব্যান্ড তৈরি করে, যার নাম ‘গোলক’। কিন্তু কাঙ্খিত সাফল্য অধরাই থেকে যায়। ফলেই ডিপ্রেশন। বিনোদন জগতে সেই ডিপ্রেশন আসতেই পারে। বলা ভালো, ডিপ্রেশনের আঁচে ফিনিক্স পাখির মতো ধেয়ে যায় চন্দ্রমৌলি।’ সিধুর বক্তব্য, বলিউড-হলিউডের বহু তারকার সঙ্গেও এমনটা ঘটেছে। একটা সময় খ্যাতির গগন স্পর্শ করার পরও তারকা হারিয়ে গিয়েছেন। সেখান থেকে অনেকে কামব্যাক করেছেন। অনেকে ডুবেছেন। কথায়-কথায় ‘আশিকী’ ছবির নায়ক-নায়িকার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন সিধু। বলেন, ‘ওঁদের অবস্থাই চিন্তা করুন। এমনটা হয়েছে তো।’

    এর পর সিধু যা বলেন, তা নিয়ে বর্তমানে বহু বিশেষজ্ঞ মত পোষণ করেছেন। তা হল—‘কথা বলা দরকার’। কমিউনিকেশন। আলোচনা। সিধু বলেছেন, ‘চন্দ্রমৌলি কথা বলতে পারত। চুপ থাকলে যন্ত্রণা ও হতাশা বাড়ে। আমাদের সঙ্গে দুঃখ ভাগ করে নিতে পারত। আমরা তো ওঁর বন্ধু ছিলাম। কত সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি। দুটো কথা বললে মন হালকা করলে কী হত? এটা তো একটা লস। আমাদের ও শ্রোতাদের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি।’

    সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রবিবার সারাদিন বাড়িতে একাই ছিলেন চন্দ্রমৌলি। তাঁর ঝুলন্ত দেহ প্রথম দেখতে পান বন্ধু মহুল চক্রবর্তী। সংবাদমাধ্যমকে মহুলের বক্তব্য, সকাল থেকে ফোন ধরছিলেন না চন্দ্রমৌলি। ফলে অন্য একজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে তাঁর বাড়িতে যেতেই দেখতে পান ঘরের পাখার সঙ্গে ঝুলছে চন্দ্রমৌলির দেহ।
  • Link to this news (এই সময়)