• মেদিনীপুর মেডিক্যালে CID, জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে অধ্যক্ষ-সুপারকে, বিচারের আশায় মৃতার স্বামী
    এই সময় | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্যালাইন কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেই নির্দেশ মতো মঙ্গলবার ওই হাসপাতালে পৌঁছেছে তদন্তকারী সংস্থার দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। সূত্রের খবর, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী এবং হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত রাউতের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন,  প্রসূতির মৃত্যুতে কোনও গাফিলতি থাকলে অভিযুক্তদের  বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। 

    সিআইডি তদন্তের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন মৃত প্রসূতি মামনি রুইদাসের স্বামী দেবাশিস রুইদাস। তিনি বলেন, ‘আমাদের যা সর্বনাশ হওয়ার হয়েছে। আমার দুধের শিশু মায়ের কোল পেল না। খাবার পাচ্ছে না ঠিকমতো। ডাক্তারদের গাফিলতি না কি জাল স্যালাইন, কী কারণে মৃত্যু হলো স্ত্রীর, সেই সত্যিটা জানতে চাই।’

    পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওই জেলার ‘ম্যাটার্নাল মর্টালিটি রেশিও’ (এমএমআর) এই রাজ্যের এবং দেশের সার্বিক এমএমআরের তুলনায় অনেকটাই কম। চলতি ২০২৪-২৫ বছরে এখনও অবধি জেলায় প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ৩০। এমএমআর (প্রতি লাখে প্রসূতি মৃত্যু) ৭৩। সেই তুলনায় রাজ্য ও সারা দেশের প্রসূতি মৃত্যুর হার বা এমএমআর যথাক্রমে ১০৩ ও ৯৭।  

     স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি সূত্রের খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত যে ৩০ জন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে  ২০ জন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিলেন। যদিও তা খুব অস্বাভাবিক নয় বলেই সাফাই মেদিনীপুর মেডিক্যালের চিকিৎসকদের। তাঁদের দাবি, ‘জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সঙ্কটজনক প্রসূতিদের এখানে রেফার করা হয়।’

    জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, ‘এই জেলায় প্রসূতি মৃত্যুর হার কম। চলতি বছরে তা আরও কমানোই লক্ষ্য।’

    জেলার অন্য হাসপাতালের তুলনায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এমএমআর সবচেয়ে বেশি কেন? এই প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘এই মেডিক্যাল কলেজে সব ধরনের প্রসূতি ভর্তি। তাই এটা স্বাভাবিক।’

    যদিও রেকর্ড বলছে মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগকে গত ডিসেম্বর মাসেও ভর্ৎসিত হতে হয়েছিল স্বাস্থ্য দপ্তরের ভার্চুয়াল বৈঠকে। গত কয়েক মাস ধরেই অভিযোগ ছিল, সিজ়ারের সময়ে  থাকেন না সিনিয়র চিকিৎসকরা। 

    স্যালাইন কাণ্ডে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে,  শুধুই নিষিদ্ধ স্যালাইন দেওয়াই নয়, ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে রক্তক্ষরণ থামানো যায়নি ৫ প্রসূতির।  অতিরিক্ত মাত্রায় অক্সিটোসিন প্রয়োগের ফলেই কিডনি বিকল হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তরের তদন্তে উঠে এসেছে। আর এ জন্য সিনিয়র চিকিৎসকের অনুপস্থিতিকে একটা বড় কারণ হিসেবে ধরছেন স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্তারা।

  • Link to this news (এই সময়)