• হস্টেলে থেকে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী, শোরগোল আলিপুরদুয়ারে
    এই সময় | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, আলিপুরদুয়ার: প্রবল পেটে ব্যথা শুরু হওয়ায় সকাল সকাল আবাসিক ছাত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়তে হয়েছিল সরকারি হস্টেল কর্তৃপক্ষকে। ভর্তির সময়ে প্রাথমিক ভাবে ধারণা হয়েছিল যে, কিশোরী অ্যাপেনডিক্সের যন্ত্রণায় ভুগছে। কিন্তু তাকে দেখামাত্র সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের। ষোল বছরের মেয়েটিকে এর পর লেবার রুমে পাঠানো হয়। সকাল ৮টা নাগাদ পুত্রসন্তানের জন্ম দেয় ওই নাবালিকা।

    আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটার সরকারি হস্টেলের এই ঘটনায় জেলা জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি নজরে আসতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানায় ফালাকাটা থানায়। সঙ্গে সঙ্গেই পকসো ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জেলা শিশু সুরক্ষা কমিশনের কর্তারাও।

    হস্টেলের তরফে জানানো হয়েছে, জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের বাসিন্দা ওই ছাত্রী ঘন ঘন ছুটি নিয়ে বাড়ি যেত। দীর্ঘ দিন ছুটি কাটিয়ে গত ৮ জানুয়ারি হস্টেলে ফিরেছিল সে। এত বড় ঘটনা ঠিক কী ভাবে সকলের নজর এড়িয়ে গেল, তা নিয়ে হস্টেল সুপার বলেন, ‘কোনও বেবি বাম্প লক্ষ্য করা যায়নি। শীতকাল হওয়ায় ভারী পোশাকের কারণে বিষয়টি নজর এড়িয়ে গিয়েছে।’ যদিও এই উত্তরে সন্তুষ্ট নন ফালাকাটার বিডিও অনীক রায়। তিনি বলেন, ‘গাফিলতি অবশ্যই হয়েছে। গোটা বিষয়টি আমি জেলাশাসক–সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছি। ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।’

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরেই ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তার প্রেমিককেও চিহ্নিত করা গিয়েছে। শিশু সুরক্ষা কমিশনের নির্দেশ পাওয়ার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় নাবালিকার। যার ফলশ্রুতিতেই ওই অনভিপ্রেত ঘটনাটি ঘটেছে। সরকারি হস্টেলে শারীরিক সম্পর্কের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ ওই নাবালিকার বাবা বলেন, ‘একটি ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এত কিছু আমি বুঝতে পারিনি। আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে থাকেন না। বাড়িতে কোনও মহিলা না–থাকায় মেয়ে যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে, তা টের পাইনি।’

    জেলা শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বোস বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। খবর জানা মাত্র সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহের জন্য সিডব্লিউসি–র দুই প্রতিনিধিকে ফালাকাটায় পাঠানো হয়েছে।’

    ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার শুভাশিস শী বলেন, ‘যে কোনও নাবালিকার সন্তান প্রসব করার ঘটনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও বেআইনি বিষয়। ঘটনা নজরে আসা মাত্রই পুলিশকে জানিয়ে পকসো ধারায় মামলা রুজু করার সুপারিশ করেছি। তবে নাবালিকা মা ও শিশুসন্তানটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)