মর্মান্তিক! মায়ের সঙ্গে স্কুটিতে করে টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছিল পাঁচ বছরের শিশু। ভয়ঙ্কর পথদুর্ঘটনা প্রাণ কাড়ল তার। নিহতের নাম বিভান রায়। কাকতালীয় ভাবে, ১৩ তারিখে জন্ম বিভানের। জীবন থামল ১৩-তেই। মার্চে তার জন্মদিন। ঠিক তার দু মাস আগে সব শেষ! সোমবার রাতে শিলিগুড়ির আশিঘর ফাঁড়ির ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ দিন রাতে টিউশন পড়ে মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল বিভান। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ইস্টার্ন বাইপাসে হঠাৎই দ্রুত গতিতে আসা একটি লরি স্কুটির পাশে চলে আসে। স্কুটিতে মায়ের পিছনে বসে ছিল ছোট্ট বিভান। লরি চলে আসায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান মা-ছেলে। মা পড়েন রাস্তার এক দিকে, ছেলে পড়ে মাঝ রাস্তায়।
এ দিকে লরির গতি এতটাই বেশি ছিল, চালক ব্রেক কষার চেষ্টা করেও সফল হননি। রাস্তায় পড়ে থাকা বিভানকে পিষে দেয় লরির চাকা। ভয়ঙ্কর এই ঘটনায় আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা তড়িঘড়ি মা ও শিশুকে উদ্ধার করে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।
গভীর রাত পর্যন্ত বিভানকে নিয়ে যমে-মানুষে টানাটানি চলে। বহু চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। মা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। আশিঘর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘাতক লরিটিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বিভানের বাড়ি সুভাষপল্লি হাতিমোড় এলাকায়। মঙ্গলবার সেই এলাকা পুরো থমথমে। বিভানের বাবা শিলিগুড়ি কোর্টের আইনজীবী। পুত্রশোক সামলে উঠতে পারছেন না তিনি। উদ্বেগ রয়েছে স্ত্রীর শরীর নিয়েও।
সিসিটিভিতে দুর্ঘটনার মুহূর্তের যে ফুটেজ দেখা গিয়েছে, তা সাংঘাতিক। রাস্তার উপরে পর পর দুটি বাম্পার। সেই বাম্পারের সামনেই স্কুটি নিয়ে উল্টে পড়েন বিভানের মা। স্কুটিটি এর পর একে বারে ঘুরে গিয়ে রাস্তার ধারে পড়ে। পিছনে একটি বাইক ছিল। সেই বাইকও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় বিভানের মাথায় হেলমেট ছিল কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গত নভেম্বরে সল্টলেকের ২ নম্বর গেটের কাছেও এরকমই মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনা ঘটে। মায়ের সঙ্গে স্কুটিতে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল আয়ুষ পাইক নামে ১১ বছরের এক পড়ুয়া। দুই বাসের রেষারেষির কবলে প্রাণ যায় তাঁর।