এই সময়, কোচবিহার: সীমান্তের কাঁটাতার কেটে বাংলাদেশি পাচারকারীরা গোরু পাচারের চেষ্টা করতেই বাধ সাধে গ্রামের পথ কুকুরের দল। রাতের অন্ধকারে কুকুরদের চিৎকারে ছুটে আসেন জওয়ানরা। অবস্থা বেগতিক দেখে সে সময়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিএসএফের উপর চড়াও হয় ও পারের দুষ্কৃতীরা। আত্মরক্ষায় এরপর দু’রাউন্ড গুলি চালান জওয়ানরা। এক পাচারকারী জখম হলে তাকে টেনে নিয়ে সঙ্গীরা চলে যায় বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের দিকে। শনিবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে মাথাভাঙা থানার গোপালপুরে।
রবিবার ১৫৬ ব্যাটেলিয়নের পক্ষ থেকে মাথাভাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরে বিষয়টি সামনে এসেছে। বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাঁটাতার কাটতে বাধা দেওয়ায় জওয়ানদের ওপরে দা নিয়ে চড়াও হয় বাংলাদেশের পাচারকারীরা।
বুড়াবুড়ি গ্রামের বাসিন্দা মানিক রায় ডাকুয়া বলেন, ‘রাতে সংঘর্ষ চলার সময়ে বিএসএফ ছিল কিছুটা দূরে৷ গ্রামের পথে অন্ধকারের মধ্যে কুকুরগুলো তারস্বরে চিৎকার করছিল। কিছু একটা হচ্ছে বুঝতে পেরে জওয়ানরা কাছে এসে দেখে দল বেঁধে পাচারকারীরা কাঁটাতারের বেড়া কেটে যাওয়া আসার রাস্তা তৈরি করছে।’
সোমবার সীমান্ত এলাকায় যান মাথাভাঙা থানার পুলিশ আধিকারিক হেমন্ত শর্মা। বিএসএফ জওয়ানদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কাঁটাতারের এ পাড়ে মাথাভাঙার গোপালপুর গ্রামের বুড়াবুড়ি এলাকা। ও পাড়ে বাংলাদেশের পাটগ্রাম। এর আগেও বুড়াবুড়ি এলাকার কাঁটাতারের বেড়া কেটে এ পার থেকে গোরু বাংলাদেশের দিকে পাচারের চেষ্টা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হামেশাই গভীর রাতে দুষ্কৃতীদের গোরু নিয়ে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার দিকে যাওয়ার আওয়াজ পাওয়া যায়৷ মূলত কাঁটাতারের বেড়ার ওপর আর নীচের তারের দিকে বেঁধে মাঝের ফাঁকে বাঁশ ফেলে এ পাড় থেকে ও পাড়ে গোরু পাচার করা হয়। গোরুগুলি যাতে চিৎকার না করে তাই আগে থেকে মুখ বেঁধে দেওয়া হয়।
অনেক সময়ে কাঁটাতারের মাঝে অতিরিক্ত জাল থাকলে লোহার তার ওপরের দিকে কেটে উচ্চতা কমিয়ে একপাশে মইয়ের মাথায় গোরু বেঁধে ওপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিএসএফ জানিয়েছে, বুড়াবুড়ি সীমান্ত এলাকায় গোরু পাচারের জন্য কাঁটাতারের বেড়া কাটার চেষ্টা হয়েছিল। সেজন্য বাংলাদেশের পাটগ্রামের দিক থেকে জমায়েত হয়েছিল পাচারকারীরা। শীতের মরশুমে কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে দৃশ্যমানতা কম থাকা পাচারকারীদের চোরাকারবারের জন্য উপযুক্ত সময়। শনিবার রাতের ঘটনার পরে আরও সতর্ক হচ্ছে বিএসএফ। সীমান্তের গ্রামবাসী মনকিশোর শীল বলেন, ‘আমরাও চাই চোরাচালান ও পাচার রুখতে বিএসএফ সীমান্ত এলাকায় আরও নজরদারি বাড়াক।’