• বৈচিত্রে মধ্য়ে ঐক্যের রেশ কলকাতার আবাসন উতলিকায়, বাসিন্দারা মাতলেন লোহরি-পোঙ্গল-মকর সংক্রান্তি-বিহু উদযাপনে ...
    আজকাল | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পোষ মাসের শেষ দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপিত হয়ে থাকে লোহরি, বিহু, মকর সংক্রান্তি এবং পোঙ্গল। প্রত্যেকটিই  প্রাণবন্ত উৎসব। এই উৎসবগুলি সূর্যের উত্তরণ এবং ফসল কাটার উদযাপনকে তুলে ধরে। তবে, এই উৎসবগুলির সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন। প্রকৃতির প্রতি সাধারণ মানুষের কৃতজ্ঞতার প্রতীক এইসব উৎসব উদযাপন।

    একনজরে এইসব উৎসবের মাহাত্ম্য- 

    লোহরি- প্রধানত পঞ্জাবে উদযাপিত হয়ে থাকে। সূর্য দেবতাকে উৎসর্গ করা প্রকৃতির উর্বরতার উদযাপনে একটি ফসল কাটার উৎসব। এই উৎসব শীতকালীন সমাপ্তিরও ইঙ্গিত দেয়। প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে মানুষ এই উৎসবে আগুনে জ্বালান, তাতে তিল, ভুট্টার খই এবং অন্যান্য জিনিস নিক্ষেপ করেন। সন্ধেতে ঐতিহ্যবাহী গান গেয়ে এবং আগুনের চারপাশে ভাংড়া নাচের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। 

    বিহু- অসমে পালিত হয়ে থাকে বিহু। এই উদযাপনের তিনটি স্তর রয়েছে। এপ্রিলে পালিত হয় রোঙ্গালি বা বোহাগ বিহু, অক্টোবরে কোঙ্গালি বা কাটি বিহু এবং জানুয়ারিতে ভোগালি বা মাঘ বিহু। রোঙ্গালি বিহু অসমীয়া নববর্ষ এবং বসন্তের আগমনকে চিহ্নিত করে। এটি একটি আনন্দের উপলক্ষ যা ভোজ (খাওয়া-দাওয়া), সঙ্গীত এবং বিহু নৃত্য দ্বারা উদয়াপিত হয়ে থাকে। ভোগালি বিহু ফসল কাটার মরসুমের সমাপ্তি চিহ্নিত করে, যা খাওয়া-দাওয়া এবং বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। বিভিন্ন উপজাতি ও অহমীয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষ সম্মিলিতভাবে এই উৎসব উদযাপন করতে সমবেত হন।

    মরক সংক্রান্তি- সৌর ক্যালেন্ডার অনুসারে পালিত হয় মকর সংক্রান্তি। এটি মকর রাশিতে সূর্যের প্রবেশকে নির্দেশ করে। যা আসলে শীতের সমাপ্তির সূচনা করে। ভারত জুড়ে বিভিন্ন নামে পালিত হয় এই উৎসব। যেমন গুজরাটে উত্তরায়ণ, কর্ণাটকে সংক্রান্তি এবং তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল। গুজরাটে ঘুড়ি ওড়ানো, মহারাষ্ট্রে তিলের মিষ্টি খাওয়া হয় মকর সংক্রান্তিতে। এছাড়া, ঐতিহ্যগতভাবে মকর সংক্রান্তি হল নতুন ফসলের উদযাপন। খাওয়া-দাওয়ার এই উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা শুভেচ্ছা, শান্তি এবং সমৃদ্ধির প্রতীক।

    পোঙ্গল- মূলত তামিলনাড়ুতে পালিত হয়। একদিন নয়, এই উৎসব পালিত হয় তিন দিনব্য়াপী (১৪ থেকে ১৭ জানুয়ারি)। মকর সংক্রান্তির মত, পোঙ্গল সূর্যের উত্তরায়ণকে চিহ্নিত করে। এই উৎসবের নাম তামিল শব্দ 'পোঙ্গু' থেকে এসেছে, যার অর্থ 'সেদ্ধ করা'। এটি 'পোঙ্গল' নামক একটি খাবার রান্নাও চিহ্নিত কের। কেন এই উৎসব তিনব্য়াপী হয়ে থাকে? উৎসবের প্রথম দিন, ভোগি, পুরানো জিনিসপত্র পরিষ্কার এবং ফেলে দেওয়ার জন্য। দ্বিতীয় দিন, থাই পোঙ্গল, দুধ এবং গুড় দিয়ে তাজা চাল সেদ্ধ করার জন্য। মাত্তু পোঙ্গল গবাদি পশুদের সম্মান জানানো,  কানম পোঙ্গল আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার জন্য। পারিবারিক বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর ভর করে পোঙ্গল প্রকৃতির উদারতা উদযাপন করে থাকে।

    সম্মিলিতভাবে, এই উৎসবগুলি মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের প্রকাশ। এগুলি বিভিন্ন অঞ্চলের ভারতীয়দের সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা এবং সমৃদ্ধ কৃষির স্বীকৃতির জন্য পালিত হয়ে থাকে। এইসব উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ গান, নাচ এবং খাওয়া-দাওয়া, যা ভারতীয় সংস্কৃতির সম্প্রীতি, বৈচিত্র্য এবং ঐক্যকে চিত্রিত করে।

    উতলিকা লাক্সারি কনডোভিল বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছে। ১৩ জানুয়ারি পালিত হয় উতলিকা ঐক্য দিবস। উদযাপিত হয়েছে লোহরি, পোঙ্গল, মকর সংক্রান্তি এবং বিহু। আবাসনের বাসিন্দারাই ঐতিহ্য মেনে অগ্নিসংযোগ, বিহু নৃত্য, ঐতিহ্যবাহী ভাঙড়া নৃত্য পরিবেশনা করেছেন। আয়োজন ছিল ঐতিহ্যবাহী নৈশভোজেরও। এই উদ্য়োগ গত বছর শুরু হয়, তবে এ বছর বাসিন্দাদের যোগদান চোখে পড়ার মত। 
  • Link to this news (আজকাল)