• ‘স্যালাইন কিনে এনে দিয়েছিলাম বলেই হয়ত আমার স্ত্রী এখনও সুস্থ’, স্বস্তিতে রেখার স্বামী
    এই সময় | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সিজ়ার হওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৪ প্রসূতি।  তাঁদের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, ৩ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। ওই দিনেই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে সিজ়ার হওয়া আরেক প্রসূতি রেখা সাউ মঙ্গলবার নিজেই জানান, তিনি ভালো আছেন। স্বাভাবিকভাবেই খুশি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার দিন সিজ়ারের জন্য বাইরে থেকে স্যালাইন এনে দিয়েছিলেন রেখার স্বামী। আর সেই কারণেই তিনি সুস্থ রয়েছেন, দাবি করছেন পরিবারের সদস্যরা। 

    গত বুধবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগে ৭ জনের সিজ়ার হওয়ার কথা ছিল। একদম শেষে সিজ়ার হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা সংলগ্ন খাকুড়দার সন্তোষ সাউয়ের স্ত্রী রেখা সাউয়ের। সিজ়ারের আগে রাত ১টা নাগাদ বাইরে থেকে পাঁচটি স্যালাইনের বোতল এবং কিছু ইঞ্জেকশন ও ওষুধ কিনে এনে তিনি হাসপাতালের কর্মীদের দিয়েছিলেন বলে জানান সন্তোষ। 

    মঙ্গলবার ‘এই সময় অনলাইন’-কে তিনি বলেন, ‘ওই দিনে স্যালাইনটা কিনে এনেছিলাম বলেই হয়ত স্ত্রীকে আজ সুস্থ দেখতে পাচ্ছি।’ যদিও রেখার সন্তান সুস্থ নয়। তাকে নিকু (কাচের ঘর)-এ রাখা হয়েছে। জন্মের পর সন্তানকে দেখেননি তার বাবা। এখন স্ত্রী এবং ছেলেকে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যেতে চান সন্তোষ। 



    ‘মুচলেকাতে সই করতে বলেছিল…’

    সন্তোষ জানান, তাঁর স্ত্রীকে রক্তচাপ কম থাকার কারণে বুধবার বিকেলেই বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। রাতে তাঁকে জানানো হয় যে স্ত্রীকে সিজ়ার করতে হবে। সেই সময়েই সই করিয়ে নেওয়া হয়ছিল একটি মুচলেকাতেও। 

    সন্তোষের কথায়, ‘ওই সময়ে একজন ডাক্তারবাবু বলেছিলেন আমার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। এরপর আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় স্ত্রী এবং সুস্থ সন্তানের মধ্যে বেছে নিতে। আমি আমার বাবা-মা'র সঙ্গে কথা বলে স্ত্রীকে বেছে নিই। এরপর আমাকে একটি মুচলেকাতে সই করিয়ে নেওয়া হয় এবং একটি কাগজ দিয়ে কিছু জিনিস বাইরে থেকে এনে দিতে বলা হয়েছিল। হাসপাতালের ওষুধ দোকান থেকে ৫টি স্যালাইন এবং ওষুধ, ইঞ্জেকশন নিয়ে এসে দিই।’

    সন্তোষ জানান, বাকি চার প্রসূতির পরিবারকে বেড টিকিটের উপর ইংরেজিতে লেখা একটা কাগজে সই করানো হয়েছিল। তাঁকে একটি সাধারণ সাদা কাগজে সই করানো হয়। ওই দিন রাতে মামণি রুইদাস, মাম্পি সিং, নাসরিন খাতুন এবং মনোয়োরা বিবির অস্ত্রোপচারের পরে অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ার কারণেই  সন্তোষ-সহ বাকি তিন প্রসূতির পরিবারকে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে বলা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে সন্তোষের পরিবার।

    সন্তোষ বলেন, ‘ছেলেকে জন্মের পর থেকে দেখিনি। ও লড়াই করে যাচ্ছে। তবু ভালো সে দিন বাইরে থেকে স্যালাইন এনে দিয়েছিলাম বলে স্ত্রী সুস্থ আছে।’

  • Link to this news (এই সময়)