• বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওয়াকফ নিয়ে মাঠে নামছে নওশাদের দল, শহিদ মিনার ময়দানে সমাবেশ এ মাসেই
    আনন্দবাজার | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ওয়াকফ নিয়ে মাঠে নামতে চলেছে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। আগামী ২১ জানুয়ারি আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। ওই দিনই শহিদ মিনার ময়দানে সভা ডেকেছেন নওশাদেরা। ইতিমধ্যে শহিদ মিনার ময়দান পরিদর্শনও করেছেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা। আইএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশের অনুমতিও তারা পেয়ে গিয়েছে।

    ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে আপাতত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-তে আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে সেই কমিটির মেয়াদও বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কমিটিতে অত্যন্ত সক্রিয়তা দেখিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, ফুরফুরা শরিফও শ্রীরামপুর লোকসভার মধ্যেই পড়ে। যদিও নওশাদের বক্তব্য, ‘‘ওয়াকফ নিয়ে তৃণমূলের সক্রিয়তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ বিধানসভায় যখন আলোচনা হল, তখন আমরা দেখেছিলাম তৃণমূলের বিধায়কদের কেমন গা-ছাড়া মনোভাব!’’

    নওশাদদের সমাবেশে ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল ছাড়াও জনজাতিদের বনাঞ্চলের অধিকার রক্ষা, আরজি করের নির্যাতিতার জন্য ন্যায় বিচারের দাবিও রয়েছে। যদিও, নওশাদদের সমাবেশের আগেই আগামী ১৮ জানুয়ারি আরজি করে মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

    ওয়াকফ বাতিলের দাবিতে তৃণমূলও মাস দেড়েক আগে কলকাতায় সমাবেশ করেছিল। সেই সমাবেশে ভিড়ও হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। এ বার ওয়াকফকে মুখ্য ‘হাতিয়ার’ করেই ময়দানে নামতে চাইছে আইএসএফ। যদিও নওশাদের দাবি, বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তাঁরা এই কর্মসূচি করছেন না।

    যদিও নওশাদদের সমাবেশকে গুরুত্ব দিতে চায়নি তৃণমূল। লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বলেন, ‘‘নওশাদের আলাদা দল। ওরা কখনও সিপিএমের সঙ্গে থাকে, কখনও থাকে না। ওদের প্রার্থীরা জামানতই রক্ষা করতে পারেন না। তাই ওদের এই সব কর্মসূচির কোনও মূল্য নেই।’’ কল্যাণের কথায়, ‘‘বাংলার মানুষের অভিভাবক এক জনই— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

    সংখ্যালঘু সংক্রান্ত বিষয়ে ‘গুরুত্ব’ দিতে রাজ্য সরকারও পদক্ষেপ করেছে। বাম আমলের মন্ত্রী তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা আব্দুস সাত্তারকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা (সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা) নিয়োগ করেছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের প্রথম সারির অনেকের বক্তব্য, অনেক কিছুর মতো সাত্তারের ওয়াকফ নিয়েও পড়াশোনা, সম্যক ধারণা রয়েছে। রাজ্য সরকার সেটাকেও কাজে লাগাতে চায়। যদিও সাত্তার কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনও বিষয়েই কোনও প্রতিক্রিয়া দিই না।’’

    উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকেই ধর্মতলায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। তা ধুন্ধুমার আকার নেয়। ওই দিনই নওশাদকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার পর তাঁকে ৪২ দিন হাজত বাস করতে হয়েছিল। তবে এ বারের সমাবেশকে শান্তিপূর্ণ করার বিষয়ে দলের কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন নওশাদেরা।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)