পূণ্যার্থীদের ফেলা বর্জ্য পদার্থ দিয়ে গঙ্গাসাগরে তৈরি হবে নতুন রাস্তা...
আজকাল | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় এবার সাগরের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ। গঙ্গাসাগরে পূণ্যার্থীদের ফেলে দেওয়া বর্জ্য পদার্থ দিয়েই তৈরি হতে চলেছে গঙ্গাসাগরের রাস্তা। কথায় বলে ‘সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার’। অর্থাত্ সব তীর্থে বারবার গিয়ে যে পূণ্যলাভ হয় গঙ্গাসাগর মেলায় মাত্র একবার এসে সেই পরিমাণ পূণ্যলাভ করা সম্ভব। হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ এই তীর্থস্থান। গঙ্গানদী এখানে সাগরে এসে মিশেছে। তাই এই স্থানের নাম গঙ্গাসাগর। সাগরের কপিলমুনির আশ্রম প্রাঙ্গণে এবার ৮ জানুয়ারি শুরু হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
চলতি বছর ইতিমধ্যেই ৫৫ লক্ষের বেশি পূণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান সেরে গেছেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। মকর সংক্রান্তির স্নান উপলক্ষে এলাহাবাদে আয়োজিত কুম্ভ মেলার পরে সবথেকে বড় মেলা হল এই গঙ্গাসাগর মেলা। আর এই উত্সব উপলক্ষ্যে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ জড়ো হন এই সাগরের সৈকতে। এত মানুষের সমাগম হওয়ার কারণে সাগর চত্বরে প্রচুর ময়লা আবর্জনা এই সময় জড়ো হয়। সেই কথা মাথায় রেখে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। আর্বজনাকে রিসাইকেলিং করে কীভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র বানানো যায়, তা নিয়ে একটি কর্মশালা হচ্ছে। মেলা শেষের পরে কাচের বোতল, পুরানো কাপড় এবং অন্যান্য জিনিস সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হবে। ফেলে দেওয়া জিনিস যে আবারও পুনর্ব্যবহার করা যায়।
এমনকি গঙ্গাসাগরে পূণ্যার্থীদের বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে নির্মাণ করা হবে গঙ্গা সাগরের বিভিন্ন রাস্তা। এমনটাই জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য অনিতা মাইতি বালা। তিনি জানান, ‘গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৫ উপলক্ষে জানুয়ারি মাস থেকেই গঙ্গাসাগরে ভিড় জমিয়েছেন তীর্থযাত্রীরা। আর এই তীর্থযাত্রীদের ফেলে দেওয়া বর্জ্য নিয়ে আমাদের এই মহান কর্মযজ্ঞ। তীর্থযাত্রীদের ফেলে দেওয়া বর্জ্য এখানে এনে পুনর্ব্যবহার করে জৈব সার থেকে শুরু করে কাচের জিনিসপত্র এমনকি গঙ্গাসাগরে বিভিন্ন রাস্তার ক্ষেত্রে এই বর্জ্য পদার্থ আমরা পুনর্ব্যবহার করে মানুষের কর্মযজ্ঞ গড়ে তুলছি। এই মহান কর্মযজ্ঞে ২০০–র বেশি কর্মী কর্মরত। নামখানা থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত ৮টি ইউনিটে এই মহান কর্মযজ্ঞ চলছে। কর্মীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আমরা প্রতিনিয়ত এই জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছি এবং প্রতিনিয়ত স্যানিটাইজ করছি। গঙ্গাসাগরে তীর্থ করতে আসা পূণ্যার্থীদের বর্জ্য কিভাবে মানুষের ব্যবহারে লাগে সেই কাজ আমরা চালাচ্ছি। আর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।’