• স্যালাইন কাণ্ডের নেপথ্যে ট্রেনি ডাক্তাররা? পাল্টা একাধিক প্রশ্ন তুললেন RG Kar-এর জুনিয়র ডাক্তাররা
    আজ তক | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যু ও রিঙ্গার ল্যাকটেট ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আরজি কর আন্দোলনের চিকিৎসকেরা। গতকাল আরজি কর কাণ্ডে যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা এই কাজে জড়িত কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কুণাল। জুনিয়র চিকিৎসকদের ওপর গাফিলতির অভিযোগে পাল্টা তাঁদের দাবি, "বহুবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। অভয়ার ন্যায়বিচারের আন্দোলন চলাকালীনই অভিযোগ আনি আমরা। কর্নাটকে ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার পরও কেন স্যাম্পল টেস্ট নয় কেন? অক্সিটোসিন নিয়ে আগেও অভিযোগ ছিল" এই ঘটনার পর স্বাস্থ্য দফতর ও স্বাস্থ্য সচিবদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আরজি করের আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের মুখ চিকিৎসক দেবাশিস হালদার। সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়ারাও। 

    এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার প্রশ্ন তোলেন, "মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ থেকে ৩ জন কে এসএসকেএম-এ ভর্তি করা হয়। তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখছি। আমরা গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছিলাম। গোটা ঘটনাকে চিকিৎসার গাফিলতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যে স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ রয়েছে আগে থেকে, তা নিয়ে ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে অভিযোগ ছিল জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে। রোগীকে দিলেই কাঁপুনি দেখা দিত। কর্ণাটকের ঘটনা জানার পরও কেন স্যাম্পল টেস্ট হল না? অক্সিটোসিন নিয়ে আগেও অভিযোগ ছিল। দুর্নীতির তদন্ত ঠিক ভাবে করল না স্বাস্থ্য দফতর। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আগে কেন তদন্ত হল না। প্রসূতি মৃত্যুর পর তদন্ত।"

    দেবাশিস আরও বলেন, "গঙ্গা সাগর মেলাতেও রিঙ্গার লেক্টেটে স্যালাইন এর ব্যবহার হচ্ছে নির্দেশিকায় পরও। তাহলে এবার এই ওষুধগুলো কি বাইরে থেকে কিনতে হবে?

    এই স্যালাইন নিয়ে চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর দাবি এই স্যালাইনে বিপদ রয়েছে,  তাই আরজি করে প্রসূতিদের আগেই এটি দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২-৩ বছরে এরকম একাধিক রোগীর ক্ষেত্রে কেসস্টাডিও হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষানিরিক্ষায় কোনও ফল বেরয়নি, দাবি করেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক তথা আন্দোলনের মুখ অনিকেত মাহাতো। তিনি প্রশ্ন, তাহলে কেন এখন জুনিয়র চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

    প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন কাণ্ডের জেরে জুনিয়র চিকিৎসকদের ওটি রুমে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার হয়। সার্জারি, অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়ার প্রক্রিয়ায় কোন‌ও পিজিটি যুক্ত থাকবেন না বলে নির্দেশিকা জারি করেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা মৌসুমি নন্দী। এরপর বিতর্ক তৈরি হয়। 

    মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ অভিযোগ করেছিলেন, মেদিনীপুরে স্বাস্থ্য দফতরের ওটি প্রোটোকল মানা হয়নি। বলেন, “সব সময় একজন সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতিতেই যেন ওটি করা হয়।" তিনি আরও বলেন, "এই ঘটনায় ট্রেনি চিকিৎসকরাই বিষয়টি হ্যান্ডেল করেছেন। আমরা আগেই নির্দেশ দিয়েছিলাম ট্রেনি চিকিৎসকদের সিনিয়র চিকিৎসকদের অধীনে কাজ করতে হবে। তাঁদের যথাপোযুক্ত ডিউটি রস্টার মেনে চলতে হবে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এখানেও একটি গাফিলতি হয়েছে।” এরপর‌ই এই নির্দেশিকা জারি হয়।

    গত শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপর স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত কমিটি গঠন করে। আজ, মঙ্গলবার সিআইডির টিম মেদিনীপুর মেডিক্যালে ২ পিজিটি, নার্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

    কার বা কাদের গাফিলতিতে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে, আদৌ আরএল স্যালাইনের ব্যবহার তার জন্য দায়ী কি না ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 
  • Link to this news (আজ তক)