• টুসু ভাসানে নদীঘাটে উপচে পড়ল ভিড়, ফাঁকা বাজারহাট
    বর্তমান | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও আরামবাগ: মকর পরবকে কেন্দ্র করে উত্সবের চেহারা নিল জঙ্গলমহলের জেলাগুলি। মঙ্গলবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কংসাবতী, কুমারী, শিলাবতী, টটকো, নেংসাই থেকে দ্বারকেশ্বরের পাড়ে টুসু পরবের মেলায় উপচে পড়ল ভিড়। পরবের জেরে এদিন পুরুলিয়া জেলার সমস্ত বাজারঘাট ছিল শুনশান। বন্ধ ছিল দোকানপাট। যেন অঘোষিত বন্‌ধ জারি হয়েছে জেলাজুড়ে!


    এদিন ভোর থেকেই পুরুলিয়া শহরের কংসাবতী নদীর তীরে ভিড়ে ছয়লাপ ছিল। বেলা যত গড়ায়, ততই ভিড় বাড়তে থাকে। মকর স্নান সেরে নতুন জামা কাপড় প঩রে নদীর তীরেই পিঠে খেতে দেখা যায় বাসিন্দাদের। নদীর পারেই টুসু ও চৌদল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আড়ষার দেউলবেড়ায় মেলা কমিটি এবং ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির তরফে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, টুসু, ঝুমুর নাচ, ছৌ নাচের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেইসঙ্গে মেলায় পরিবেশ রক্ষা, বাল্যবিবাহ, ডাইনি প্রথা বন্ধ নিয়ে প্রচার চালানো হয়। ঝালদা থানার তুলিন সীমানায় সুবর্ণরেখা নদীর পাড়ে এবং জয়পুরে কংসাবতী নদীর পাড়ে দেউলঘাটায় এদিন উল্লেখযোগ্য ভিড় ছিল। ভিড়ে পিছিয়ে ছিল না টটকো নদীর উপর বান্দোয়ানের যমুনা সেতু এবং দুয়ারসিনিও। পুঞ্চার নির্ভয়পুর গ্রামে কাঁসাই নদীর পাড়ে এদিন থেকে শুরু হয় মেলা। পুঞ্চা ও হুড়া থানার সীমানায় শিলাবতী নদীর উৎসস্থলে এদিন থেকে শুরু হয় এক সপ্তাহের শিলাই মেলা। মানবাজার-২ ব্লকের খড়িদুয়ারা সেতুর কাছে কুমারী নদীর পাড়ে মেলা বসে সেখানেও দিনভর চলে টুসু গান সহ অন্যান্য অনুষ্ঠান। কাশীপুরেও অনুষ্ঠান হয়।


    মঙ্গলবার বাঁকুড়াতেও মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে পর্যটকদের ঢল নামে। পাশাপাশি এদিন অনেকে পিকনিকও করেন। মুকুটমণিপুর, পরেশনাথ সহ বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় দিনটি উপলক্ষ্যে মেলাও বসে। টুসু ভাসানকে কেন্দ্র করে জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। এদিকে, মকর সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও গণ্ডগোল না হয় তারজন্য বাঁকুড়া জেলা পুলিসের তরফে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, আমরা মেলা ও পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পুলিস মোতায়েন করেছি। পাশাপাশি কেউ যাতে মদ্যপ অবস্থায় বাইক সহ অন্যান্য যানবাহন চালাতে না পারে তারজন্য জেলাজুড়ে নাকা চেকিং চলছে।  সিমলাপালের বাসিন্দা সংঘমিত্রা পাত্র, বাঁকুড়া শহরের মিঠু মণ্ডল বলেন, সোমবার রাতভর পিঠেপুলি তৈরির পাশাপাশি আমরা রাত জেগেছি। এদিন সকালে পিঠে খেয়ে মুকুটমণিপুরে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান সারি।  আরামবাগেও পুণ্য মকরস্নান সারেন বাসিন্দারা। এদিন আরামবাগ শহর লাগোয়া দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে পুণ্যার্থীরা মকর স্নান করেন। সকাল সকাল স্নান করে বাড়িতে পিঠেপুলি খাওয়া হয়। এদিন আরামবাগের কালীপুরে গঙ্গাপুজো হয়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)