সংবাদদাতা, কাটোয়া: পানীয় জলের পাইপলাইন দিয়ে জলের সঙ্গে বের হল আস্ত সাপ। মঙ্গলবার দুপুরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের গ্রুপ-ডি কর্মীদের কোয়ার্টারে এমন ঘটনায় হইচই শুরু হয়। আতঙ্কে বাসিন্দারা পাইপলাইনের মুখ বন্ধ করে দেন। বাইরে থেকে জল কিনে এনে খেতে বাধ্য হন। পুরনো পাইপলাইন সংস্কার না হওয়ায় সুপারের কাছে ক্ষোভ জানান কর্মীরা। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের মূল ভবন ছাড়াও বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। চিকিৎসক, নার্সদের কোয়ার্টার রয়েছে। পাশাপাশি গ্রুপ-ডি কর্মীদের থাকার জন্যও দোতলা কোয়ার্টার রয়েছে। সেখানেই এদিন হাসপাতালের কর্মী রওসন সাউয়ের স্ত্রী সুস্মিতা রান্নার জন্য জল নিচ্ছিলেন। কলের ট্যাপ খুলতেই আচমকা বড় বাটিতে জলের সঙ্গে সরু একটি সাপ বেরিয়ে আসে। সাপটি জ্যান্ত অবস্থায় ছিল। সুস্মিতা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে দেন। আশপাশের ঘরে থাকা অন্যরাও ছুটে আসেন। প্রত্যেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা সুপারের কাছে লিখিতভাবে বেহাল পাইপলাইন সংস্কারের জন্য আবেদন জানান।
রওসন বলেন, কোয়ার্টারে পানীয় জলের সঙ্গে সাপ বের হয়েছে। ঘরে আড়াই বছরের ছেলে রয়েছে। আমরা এতদিন কী জল খেতাম বোঝাই যাচ্ছে। পূর্তদপ্তরকে তিনবার সংস্কারের জন্য চিঠি দিয়েছি। তারা কোনও গুরুত্ব দেয়নি। এখন কোয়ার্টারের সবাই বাইরে থেকে জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছি। সুস্মিতা বলেন, আচমকা সাপ দেখে ভয় পেয়ে যাই। আমাদের শরীরে বিষ ঢুকেছে কিনা জানি না।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালের গ্রুপ-ডি কর্মীদের কোয়ার্টারটি দোতলা। নীচের তলায় পাঁচটি ও দোতলায় পাঁচটি রুম রয়েছে। কর্মীরা জানান, কোয়ার্টারের ছাদে থাকা জলের ট্যাঙ্ক বহু পুরনো। লোহার পাইপলাইনে মরচে ধরেছে। পরিষ্কার করা হয় না। পাইপলাইনে শ্যাওলা ধরেছে। সেখান দিয়েই পানীয় জল আসছে। নার্স ও চিকিৎসকদের কোয়ার্টারেরও একই হাল। দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘরের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এমনকী হাসপাতাল চত্বরের রাস্তাও বেহাল হয়ে গিয়েছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, পাইপলাইন সংস্কারের জন্য পূর্তদপ্তরকে বেশ কয়েকবার জানানো হয়েছে। আবার আমরা সাপ বের হওয়ার কথা চিঠি দিয়ে জানাব। পূর্তদপ্তরের এক অফিসার জানান, হাসপাতাল চত্বরের বেশ কয়েকটি রাস্তা সহ অন্যান্য কিছু কাজ আছে। যেগুলি সংস্কার হওয়ার প্রয়োজন। আমরা তারজন্য ডিপিআর পাঠিয়েছি। টাকা এলেই কাজ শুরু হবে।-নিজস্ব চিত্র