শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের হাজিরায় এবার চালু বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা
বর্তমান | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, করিমপুর: ইচ্ছেমতো যখন তখন হাজিরা খাতায় সই করে সরকারি স্কুলে নিজের উপস্থিতি জানান দেওয়ার দিন শেষ। কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা বা কোনও শিক্ষাকর্মী ঠিক কখন স্কুলে ঢুকলেন এবং কখন বেরিয়ে গেলেন, সেই সময় নথিভুক্ত করতে এবার বায়োমেট্রিক হাজিরা নেওয়া চালু করল প্রত্যন্ত এলাকার একটি স্কুল। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে নদীয়ার সীমান্তবর্তী হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা শুরু হল। ফলে এখন থেকে পরে এসেও কেউ হাজিরা খাতায় সই করতে পারবেন না। প্রত্যেক কর্মীর উপস্থিতির সময় লিপিবদ্ধ থাকবে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। স্থায়ী শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ২৫ জন। প্রধান শিক্ষক সহ মোট নয়টি আসন শূন্য। তার মধ্যে শিক্ষকরা কেউ দেরি করে এলে খুব সমস্যা হয়। কয়েক বছর আগেই পরিচালন সমিতির সভাপতি এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিলেও তখন তা কার্যকর হয়নি। শেষ পর্যন্ত এদিন বায়োমেট্রিক হাজিরা নেওয়া চালু হল। ঐ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অনেক সময় শিক্ষকদের স্কুলে ঢোকা এবং বাড়ি চলে যাওয়ার সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
তাই শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে সময়মতো স্কুলে আসেন বা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্কুলে থাকেন, তা নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে স্কুলে না আসার অভিযোগ কমবে। স্কুলের অভিভাবকদের অনেকেই বলেন, একটা সময় ভালো পড়াশোনা এবং পরীক্ষার ফলাফলের জন্য এই স্কুলের সুনাম ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে থেকে পূর্বতন প্রধান শিক্ষকের সময় থেকে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। ওই শিক্ষক নিজে কোনওদিন সঠিক সময়ে স্কুলে আসতেন না। শিক্ষকদের কেউ কেউ দেরিতে আসার কারণে বেশীরভাগ ক্লাস বন্ধ থাকত এবং ক্লাসের পড়ুয়ারা বাইরে খেলাধুলো করত। এখন বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অন্তত সঠিক সময়ে স্কুলে আসতে হবে।
করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোমদেব মজুমদার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেলা দশটা চল্লিশের মধ্যে স্কুলে ঢুকেছেন কি না এবং কখন স্কুল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন, তা জানা যাবে। জেলার বহু স্কুল কলেজে যখন এই ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি, তখন একটি প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল নিজের উদ্যোগে তা করে ফেলল। এটা খুব প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আগামী দিনে অন্যান্য স্কুলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করলে ভালো হবে।