দেউচা পাচামি: কয়লা উত্তোলনের জন্য গ্লোবাল টেন্ডার ডাকল নবান্ন
বর্তমান | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা রিজার্ভ বা ব্লক দেউচা পাচামিতে কয়লা উত্তোলনের স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে সবথেকে বড় পদক্ষেপটি নিয়ে ফেলল নবান্ন। ৩৪০০ একর জমিজুড়ে হবে এই কর্মকাণ্ড। নিশ্চিত হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং অন্তত এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান। সবথেকে বেশি এলাকাজুড়ে চলবে আন্ডারগ্রাউন্ড কোল মাইনিং। একেবারে শ্যাফ্ট ব্যবহার করে মাটির নীচে পৌঁছে চলবে কয়লা উত্তোলনের কাজ। আর এই আন্ডারগ্রাউন্ড কোল মাইনিং দ্রুত শুরু করার উদ্দেশ্যে বহু প্রতীক্ষিত গ্লোবাল টেন্ডার, এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) বা দরপত্র ডেকে দিল রাজ্য সরকার। ভূতাত্ত্বিক রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই এই গ্লোবাল ইওআই ডাকা হয়েছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। ২০ ডিসেম্বর এই গ্লোবাল ইওআই ডাকা হয়েছে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দরপত্র জমা দেওয়ার মেয়াদ নির্ধারিত করেই এই ইওআই চেয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম।
সম্প্রতি এক প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই স্বপ্নের প্রকল্পের কাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই বীরভূমে গিয়ে এই প্রকল্পের সার্বিক রূপরেখা নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বসু, বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম সহ রাজ্যের পদস্থ কর্তারা। ওই বৈঠকেই জমি ও প্রকল্প সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৭৬ একর জমিতে ব্যাসল্ট উত্তোলনের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে সংস্থা বাছাইয়ের কাজ হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রাথমিক কাজ। এর থেকে ৭১.৫ শতাংশ রাজস্বও আসবে উন্নয়ন নিগমের কোষাগারে। ২০০০ একরের বেশি জমিতে আন্ডারগ্রাউন্ড কোল মাইনিংয়ের পাশাপাশি প্রায় এক হাজার একরে আন্ডারগ্রাউন্ড কোল গ্যাসিফিকেশনের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। তিনটি ক্ষেত্রের কাজ একইসঙ্গে চালানোর নীতি নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এই নীতি মাথায় রেখেই প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে আধিকারিকরা জানাচ্ছেন।
মাইন ডেভেলপার কাম অপারেটর (এমডিও) নির্বাচনের লক্ষ্যে এই ইওআই’র মাধ্যমে আগ্রহী দরদাতাদের কাছে চাওয়া হয়েছে—দেউচা-পাচামি-দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিংহ কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য বিস্তারিত নকশা, পরিকল্পনা (খনির পরিকল্পনা এবং ডিপিআর প্রস্তুতি), সর্বাধিক সম্ভাব্য কয়লা সম্পদ খনন বা নিষ্কাশনের পদ্ধতি, প্রযুক্তি, অতীত অভিজ্ঞতা, নিরীক্ষিত হিসাব প্রভৃতি। এছাড়া প্রস্তাবিত ওপেন কাস্ট মাইনিং, ভূগর্ভস্থ মাইনিং ও হাইওয়াল মাইনিংয়ে খরচ এবং খনি চার্জ কত হতে পারে, আলাদাভাবে তাও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।