নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মুদ্রা কথা বলে। মুদ্রা যে ধাতু দিয়ে তৈরি, তা কথা বলে। মুদ্রার উপরে লেখা লিপিগুলি কথা বলে। সেই কথা শুনতে হয়। শুনলেই ইতিহাসের শব্দ শোনা যায়। মুদ্রা নিয়ে যাঁরা দিনযাপন করেন, গবেষণা করেন, এই কথাগুলো তাঁদের। মুদ্রার কথা শুধু বইয়ের পাতায় পড়লেই হয় না। একেবারে নিজের চোখে দেখে, হাতে নিয়ে মুদ্রা চেনার তাত্পর্যই আলাদা। সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছিল মঙ্গলবার কলকাতায় ভারতীয় জাদুঘরে। পড়ুয়াদের হাতেকলমে মুদ্রা চেনালেন ও তার ইতিহাস বলে দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার।
জাদুঘরের মুদ্রা গ্যালারিতে অধ্যাপক মজুমদার পড়ুয়াদের শোনালেন মুদ্রার গল্প। কিন্তু টাঁকশালে তৈরি হওয়া সমস্ত মুদ্রাই তো আর জাদুঘরে স্থান পায় না। কিছু হয়ে যায় সংগ্রাহকদের। কিছু চলে আসে জাদুঘরে। এই টাঁকশাল থেকে জাদুঘরে মুদ্রার যাত্রাপথ কেমন হয়? অধ্যাপক মজুমদার বলছিলেন, ‘এটাকে আমরা দু’ভাবে ভাবতে পারি। মিউজিয়ামে থাকলে অনেক মানুষ, গবেষকরা তা দেখতে পান। আবার সংগ্রাহকদের কাছে থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের মধ্যে উত্সাহ বৃদ্ধি করে।’ এখন অনেক পড়ুয়াই মুদ্রা নিয়ে গবেষণা করছেন। ‘পড়ুয়াদের নিয়ে আসার কারণ, ওঁদের মধ্যে উত্সাহ বৃদ্ধি করা। যে মুদ্রা নিয়ে পড়াশুনা করে এসেছে, সে যখন বিষয়টা চোখের সামনে দেখছে, তার অনুভূতি একেবারে আলাদা’, বলছিলেন অধ্যাপক মজুমদার।
বইতে পড়া মুদ্রাগুলি চোখের সামনে দেখতে পেয়ে অবিভূত পড়ুয়ারাও। তাঁরা বলছেন, ‘বইতে পড়া একরকম। কিন্তু চোখের সামনে তা দেখতে পেলে, বুঝতেও সুবিধা হয়।’ মুদ্রা গ্যালারি ঘুরে ঘুরে অধ্যাপক যখন পড়ুয়াদের বোঝাচ্ছেন, তাঁরাও কিন্তু মন দিয়ে তা শুনে নোট নিয়ে নিচ্ছেন। জাদুঘরের ডেপুটি ডিরেক্টর সায়ন ভট্টাচার্য বলছিলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমরা এরকম গ্যালারিগুলোতে পড়ুয়াদের এনে কাজ করার চেষ্টা করছি। এর ফলে ওরা যা নিয়ে পড়াশোনা করছে, সেগুলোই শিখতে পারছে হাতেকলমে।’