এই সময়: নব নালন্দা স্কুলে সোমবার প্রার্থনার সময়ে জানালার কাচ ভেঙে দুই পড়ুয়া গুরুতর জখম হয়েছিল। মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের ওই ক্যাম্পাসে প্রার্থনাই বন্ধ রাখলেন। গার্ডিয়ান্স ফোরামের দাবি মেনে প্রার্থনা–চত্বর ও সংলগ্ন এলাকা নেট দিয়ে ঢেকে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেই কাজ অনেকটা এগোলেও এখনও শেষ হয়নি।
এরই মধ্যে শনিবার ১৮ জানুয়ারি বা ২৩ জানুয়ারির মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁদের আলোচনা হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন নব নালন্দা গার্ডিয়ান্স ফোরামের ইন্দ্রজিৎ চন্দ। স্কুলের প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র সংবাদমাধ্যমকে জানান, ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। মঙ্গলবার ৯০ শতাংশ পড়ুয়া উপস্থিত ছিল।
ফোরামের ইন্দ্রজিৎ বলেন, ‘গুরুতর আহত প্রিয়ম দাসকে এ দিন আরজি কর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল। আমরা বিকেলে ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে এসেছি। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় কোনও বিঘ্ন ঘটুক, সেটা চাইছি না। তাই ছুটির দিনেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকদের বৈঠকের বিষয়ে প্রিন্সিপালকে প্রস্তাব দিয়েছি।’ তবে বহু চেষ্টা করেও প্রিয়মের পরিবারের সঙ্গে সরসারি যোগাযোগ করতে পারেনি ‘এই সময়’।
ইন্দ্রজিতের সংযোজন, ‘কর্তৃপক্ষর সঙ্গে অনেক দিন পর গার্ডিয়ান্স ফোরামের বৈঠক হতে চলেছে। ফলে বেশি সংখ্যক অভিভাবক উপস্থিত হবেন, সেটাও আমরা আগাম জানিয়েছি। প্রিন্সিপালও অভিভাবকদের উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।’ অন্য এক অভিভাবক জানান, এ দিন স্কুল ক্যাম্পাসের সামনে পুলিশ পিকেট ছিল। কর্তৃপক্ষ প্রার্থনা–চত্বরের অনেকটা এলাকা নেটে ঢেকে দিয়েছেন। কিছুটা এখনও বাকি । দু’এক দিনে সেই কাজ শেষ হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার প্রার্থনার সময়ে ফ্রেম–সহ জানালার কাচ ভেঙে জখম আর এক ছাত্র নবম শ্রেণির সৃঞ্জয় রায়ের মা বর্ণালী রায়ের অবশ্য অভিযোগ, ‘কাল শুধু অ্যাম্বুল্যান্স দেরি করে আসেনি। অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঘটনার কথা প্রথমে অভিভাবকদের জানানোই হয়নি। পরিবর্তে হাত কেটে রক্ত বের হতে দেখেও আমার ছেলেকে প্রার্থনার পর ক্লাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল সোমবার। ছেলেকে আমিই হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
২৪ ঘণ্টা পরেও ছেলেটি পুরো সুস্থ হয়নি। মাথায় চোট লাগায় মঙ্গলবার খানিক তন্দ্রাছন্ন ছিল সৃঞ্জয়। স্কুলের গাফিলতি নিয়ে সরব বর্ণালী বলেন, ‘এর পর কী ভাবে ছেলেকে ওই স্কুলে আবার পাঠাব, সেটাই ভাবছি।’ নবম শ্রেণিতে ভর্তির পরেই নতুন স্কুলে এমন অভিজ্ঞতা হবে ভাবতে পারেননি তাঁরা।