• শ্রী অরবিন্দ পাঠাগার এখন যেন ভূতুড়ে বাড়ি 
    বর্তমান | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের জামালদহে সরকারি গ্রন্থাগারের দরজা দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। ফলে সেটি ভূতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। গজিয়ে উঠেছে বড় বড় আগাছা। গ্রন্থাগারটির সামনে এতটাই জঙ্গলে ভরে গিয়েছে যে, সেখানে পৌঁছনো যাচ্ছে না। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, করোনার থাবা বসানোর আগে ২০১৮ সাল থেকেই বন্ধ হয়ে আছে শ্রী অরবিন্দ পাঠাগার নামে সরকারি এই গ্রন্থাগারটি। ফলে নষ্ট হচ্ছে গ্রন্থাগারে থাকা কয়েক হাজার বই। কর্মী ও পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে গ্রন্থাগারের একসময়ের গ্রন্থাগারিক গোপন সাহা জানিয়েছেন। 


    সাড়ে ছ’বছরেরও বেশি সময় ধরে জামালদহ তুলসীদেবী হাইস্কুলের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত শ্রী অরবিন্দ পাঠাগার খুলছে না। ফলে চারদিক ঢেকে গিয়েছে গভীর জঙ্গলে। মূল ফটকের সামনে ঝোলানো তালায় জং ধরেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রন্থাগারে বর্তমানে কোনও স্থায়ী গ্রন্থাগারিক নেই। ফলে গ্রন্থাগারটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে রয়েছে। জামালদহ তুলসীদেবী হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, গ্রন্থাগারটির দিকে তাকালে খুবই খারাপ লাগে। ভিতরে কয়েক হাজার বই রয়েছে। সেগুলি এখন কী অবস্থায় আছে, জানা নেই। এ প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক শিবনাথ দে বলেন, কর্মীর অভাবে জেলার সিংহভাগ গ্রন্থাগার ধুঁকছে। তবে রাজ্য সরকার শূন্যপদে নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যেই কর্মী নিয়োগের জন্য পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই ৩৪ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। নিয়োগ সম্পন্ন হলেই গ্রন্থাগারগুলি ফের সচল হবে। জামালদহের বাসিন্দা মৃন্ময় ঘোষ, কানাই বর্মন, বনশ্রী সিংহ প্রমুখ বলেন, গ্রন্থাগারটি অবহেলায়, অযত্নে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। বহু মূল্যবান বই নষ্টের মুখে। ২০১৮ সালে সর্বশেষ খুলেছিল। তখন একজন অস্থায়ী গ্রন্থাগারিক দিয়ে সপ্তাহে একদিন গ্রন্থাগারটি খোলা হতো। তিনি অবসর নেওয়ার পর থেকেই অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে গ্রন্থাগারটি। আজ পর্যন্ত কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় সেটি বন্ধই রয়েছে। 


    এলাকার বইপ্রেমী পরিমল ঘোষ, বিপ্লব রায় আসোয়ার বলেন, বহু দুষ্প্রাপ্য বই, পত্রপত্রিকা, পাণ্ডুলিপি, দুর্মূল্য সংগ্রহ ইত্যাদি ক্ষতির সম্মুখীন। অবিলম্বে কর্মী নিয়োগ করে গ্রন্থাগারটি খোলা উচিত।
  • Link to this news (বর্তমান)