স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ডায়মন্ড হারবারে নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে আয়োজিত সেবাশ্রয় ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘কারও গাফিলতির কারণে যদি কোনও প্রসূতির মৃত্যু হয়ে থাকে তবে কঠোর থেকে কঠোরতম সাজা দেওয়া হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। কারণ মানুষের প্রাণের থেকে বড় কিছু নেই।’
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতিদের ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ সংস্থার সরবরাহ করা রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (আরএল) দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। সেই হাসপাতালে ভর্তি এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। আরও তিন জন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সংস্থার স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ করেছিল তিন মাস আগে। তা সত্ত্বেও কেন সেগুলি হাসপাতালে প্রসূতিদের দেওয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি ঘটনায় চিকিৎসার গাফিলতির বিষয়টিও সামনে এসেছে। ১৩ সদস্যের তদন্তকারী দলের রিপোর্টেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অব্যবস্থা ও সিজ়ারের সময়ে সিনিয়র ডাক্তারের অনুপস্থিতির বিষয়টি উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই ঘটনায় CID তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সে প্রসঙ্গে এ দিন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পক্ষে সওয়াল করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘একটি ঘটনার কারণে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দিকে আঙুল তোলা উচিত নয়।’ এ দিন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজ্য সরকার চিকিৎসা ব্যবস্থাকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলা হচ্ছে, এর সঙ্গে আমি একমত নই। এই ঘটনায় যদি কারও গাফিলতি পাওয়া যায় তবে দলমত নির্বিশেষে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’ একই সঙ্গে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন তিনি।
তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘কোনও সরকার জ্যোতিষ বা গণৎকার নয়, আগে থেকে জানা যায় না কী ঘটবে। একটা ঘটনা ঘটলে জেলা বা রাজ্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা অনেক কিছু বলে দেয়। আরজি করের ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করেছিল। সেই মামলার সমাধান করতে CBI-এর পাঁচ মাস লাগল। এ প্রশ্ন তো কেউ করে না।’
প্রসঙ্গত, তাঁর উদ্যোগে শুরু হওয়া সেবাশ্রয় ক্যাম্পের সাফল্য দেখে আপ্লুত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্য ক্যাম্পে আড়াই লক্ষ মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি এ দিন পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘ভোট দিতেও হয়তো এত মানুষ আসেন না। একদিনে ৮০ হাজার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। সেবাশ্রয়ে ক্যাম্পে সুদূর জলপাইগুড়ি থেকেও দুরারোগ্য ব্যাধি সারাতে আসছেন মানুষ। দ্রুত তাঁদের টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের যতটা সামর্থ্য চেষ্টা করছি।’ তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত সেবাশ্রয়ের মেগা ক্যাম্প চলবে। সেখানে এতদিন ধরে রেজিস্টার্ড সমস্ত কেসের ফলো আপ করা হবে।