দেখা করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জেলে মৃত্যু ছেলের, ময়নাতদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে মা
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন। সোমবার যুবকের সঙ্গে দেখা করেন তার মা। আর তারপরেই দিনই মৃত্যু হয় যুবকের। মৃতের নাম মৌসম চট্টোপাধ্যায়। তিনি আড়িয়াদহের বাসিন্দা। অভিযোগ তাকে জেলে কোনও চিকিৎসা চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়নি। মৌসম চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মৃতের মা। তিনি দেহ ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এই আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাশাপাশি দমদম সেন্ট্রাল জেলের বিরুদ্ধে দক্ষিণেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গিয়েছে, মৌসমকে পুলিশ মাদক মামলায় গ্রেফতার করেছিল গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি। দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। গ্রেফতারের পর গত কয়েক মাস ধরে তিনি বারাকপুর সংশোধনাগারে ছিলেন। পরে তাকে দমদম সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। সেখানে থাকাকালীন সোমবার রাতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল আরজি কর হাসপাতালে। তখনই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরেই পুলিশ এবং জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতি এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলেছেন মৌসমের মা মুক্তা গঙ্গোপাধ্যায়।তার অভিযোগ, পুলিশ তার ছেলের কাছ থেকে মাসোহারা নিত। প্রথমের দিকে ছেলে তা দিলেও পরে তা বন্ধ করে দেন। আর তার জেরেই পুলিশ তাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে।
প্রসঙ্গত, আড়িয়াদহে প্রোমোটিং ও জমি ব্যবসায় সিন্ডিকেট রাজের অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। জানা গিয়েছে, মৌসমও একসময় এরসঙ্গে জড়িত ছিলেন। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় এই ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন তিনি। তবে সেইসময় সিন্ডিকেট-খ্যাত নেতা জয়ন্ত সিংহ ওরফে ‘জায়ান্ট’-এর সঙ্গে মৌসমের বিরোধ ছিল। উল্লেখ্য, আড়িয়াদহের একটি ক্লাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে জয়ন্তের বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি জেলে আছেন।
এদিকে, মৌসম পাঁচ বছর আগে বরাহনগর পুরসভায় সুপারভাইজারের চাকরি পান। এরপর প্রমোটিং ব্যবসা ছেড়ে দেন। মুক্তাদেবীর অভিযোগ, গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে দুই বন্ধুর সঙ্গে ফিরছিলেন। সেই সময় পুলিশ মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। তারপরেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলা দেওয়া হয়। এ নিয়ে আগেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর পরিবার পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছে। এছাড়াও, এদিন দক্ষিণেশ্বর থানায় দমদম জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মৌসমের পরিবার। জানা যায়, ছেলের মৃতদেহ সৎকার করেনি মৌসমের পরিবার।