৫২ দিনে দোষী সাব্যস্ত অভিযুক্ত, দ্রুত বিচার চুঁচুড়া জেলা আদালতে...
আজকাল | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
মিল্টন সেন,হুগলি: পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষন এবং খুনের ঘটনায় দ্রুত সমাপ্ত হল বিচার প্রক্রিয়া। অভিযোগ দায়ের হওয়ার মাত্র ৫২ দিনের মাথায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল চুঁচুড়া পকসো আদালত। বুধবার এই মমালার সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৪ নভেম্বর হুগলির গুড়াপ থানা এলাকায়।
পাঁচ বছরের এক শিশুকে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় প্রতিবেশী প্রৌঢ় অশোক সিং। মেয়ে মাংস খেতে চেয়েছিল, বাবা বাজারে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন তখন। বাড়ি ফিরে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বেশ কিছুক্ষণ তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাড়া-প্রতিবেশীরাও ওই শিশু কন্যাকে খুঁজতে শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অভিযুক্তের বাড়ি থেকে শিশুকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গেই ধনিয়াখালি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্তকে ব্যাপক মারধর করে।পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত আহত থাকায় তাকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পরের দিন অর্থাত ২৫ নভেম্বর শিশুর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য কলকাতা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। দ্রুত এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যের সিট গঠন করার নির্দেশ দেন হুগলি গ্রামীন পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। সিটের নেতৃত্বে থাকেন ডিএসপি ডিএন্ডটি প্রিয়ব্রত বক্সি। দ্রুত সঙ্গে চলতে থাকে হয় তদন্ত প্রক্রিয়া। তদন্ত শেষ করে আদালতে গত ৯ ডিসেম্বর মামলার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
গত ১১ তারিখ আদলতে চার্জ গঠন হয়। তারপর শুরু হয় সাক্ষ গ্রহন পর্ব। আইনজীবী জানিয়েছেন, মামলায় মোট ২৭ জনের সাক্ষ গ্রহণ করা হয়। এদিন সেই মামলার রায় দান করেন চুঁচুড়া পকসো আদালতের বিচারক চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তী। অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আগামী ১৭ জানুয়ারী হবে চূড়ান্ত রায় এবং সাজা ঘোষনা। এই প্রসঙ্গে শঙ্কর বাবু আরও জানিয়েছেন, নতুন যে বিএনএস আইন এসেছে, তাতে এত দ্রুত বিচার পর্ব শেষ হওয়া একটা দৃষ্টান্ত। বিচার পর্ব শুরু হওয়ার পর বড় দিনের সময় সাত দিন ছুটি ছিল। না হলে আরও আগে নিষ্পত্তি হত মামলার। দ্রুত্তার সঙ্গে সব সম্ভব হয়েছে পুলিশের সঠিক তদন্তের ফলে।