• ডিজিটাল অ্যারেস্টের কথা থানায় জানালে খুনের হুমকি
    বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: টাকা দেওয়ার ঘটনা স্থানীয় থানায় জানানো হলে পরিবারের লোকজনদের প্রাণে মেরে ফেলা হবে। ডিজিটাল অ্যারেস্টের প্রতারণা করার পর এমন ভাবেই হুমকি দিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। সেই কারণেই অনেকে প্রতারিত হয়ে থানায় আসছেন না বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বই, রাজস্থান এবং বেঙ্গালুরুতে ডিজিটাল অ্যারেস্টের সঙ্গে যুক্ত সাইবার অপরাধীদের বহু গ্যাং গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি কলকাতা পুলিস এই চক্রের এক মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে আরও বহু গ্যাং এখনও সক্রিয় রয়েছে। ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা তাদের মূল টার্গেট। চারদিন আগে তারা পালিতপুরের এক সাধুকে সাইবার অ্যারেস্ট করে টাকা হাতানোর চেষ্টা করে। ওই ঘটনার পর তিনি এখনও আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতারকরা যেভাবে কথা বলছিল তাতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ওরা প্রথম দিকে ধমক দেয়। বিভিন্নভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। যদিও আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই জানতে পেরে তারা বেশিক্ষণ সময় নষ্ট করেনি। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবার অপরাধীরা ফোন করে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। কখনও বলা হচ্ছে ‘আপনার নামে একটি পার্সেল করা হয়েছিল। তাতে ড্রাগস রয়েছে। সেই কারণে আপনাকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করা হল। রেহাই পেতে হলে টাকা লাগবে। তবে তা কাউকে জানানো যাবে না। থানায় জানালে পরিবারের লোকজনদের ক্ষতি করা হবে’। তাদের এই হুমকিতে অনেকে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে। কখনও আবার বলা হচ্ছে, ‘এক যুবতী আপনার নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছে। বাড়িতেই আপনাকে ক্যামেরার সামনে বন্দি করে রাখা হল। টাকা দিলে মুক্তি পাওয়া যাবে’। আবার কখনও বলা হয়, ‘আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশে টাকা পাঠানো হয়েছে। হিসেব বহির্ভূত মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। তদন্ত করার পরই আপনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে’। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রতারকরা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলত। তবে সেগুলি কোনওটাই তাদের নামে খোলা হয় না। অন্যের অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে তারা টাকা লেনদেন করে। পুলিস জানিয়েছে, ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বলে কিছু হয় না। তা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে। তারপরও অনেকেই ফাঁদে পা দিচ্ছে। সাইবার প্রতারকদের শিকার হলে থানায় জানানো উচিত। তা না হলে সাইবার অপরাধীরা সুযোগ পেয়ে যাবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)