• ভরতপুরে নজরদারির অভাব চলছে দেদার বালি-মাটি পাচার
    বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: প্রশাসনের নজরদারির অভাবে দেদার বালি ও মাটি পাচার চলছে ভরতপুরে। দুর্গম এলাকা হওয়ার সুযোগ নিয়ে অবাধে চলছে বালি ও মাটি পাচার। ভরতপুর ব্লকের ময়ূরাক্ষী নদী সংলগ্ন চাঁদপুর ও জাখিনা গ্রামের কাছাকাছি চলছে এই অবৈধ কারবার। কয়েকদিন ধরেই অসংখ্য বালি ও মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চলাচল করছে কান্দি মাস্টার প্ল্যানের বাঁধের উপর দিয়ে। ফলে বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অবশ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাখিনা গ্রামের উপর দিয়ে তৈরি হয়েছে কুয়ে নদীর বাঁধ। গ্রামের শেষে ৫০০ মিটার দুর্গম জঙ্গলে ঘেরা ওই বাঁধের উপর দিয়ে যেতে হয়। এরপর উত্তরদিকে রয়েছে মরা কাশফুলের গাছের জঙ্গল। ওই কাশজঙ্গলের উত্তরে রয়েছে ময়ূরাক্ষী নদীর দক্ষিণ দিকের বাঁধ। দুই নদীর বাঁধে ঘেরা মরা কাশজঙ্গলেই চলছে বালি ও মাটি কেটে পাচার। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেক ধরে অনেক ট্রাক্টরে বোঝাই করে এখান থেকে বালি ও মাটি কেটে পাচার করছে। আর ওই ট্রাক্টরগুলি কান্দি মাস্টার প্ল্যানের জন্য দেওয়া নদীবাঁধের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলছে এই পাচার।ওখানে কদর শেখ নামে এক যুবক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের ডিসিআর দেখিয়ে বলে, আমি মাটি ও বালি তোলার জন্য ডিসিআর কেটেছি। এই এলাকা থেকে ময়ূরাক্ষী নদীর পশ্চিম বাঁধ ধরে প্রায় এক কিলোমিটার যাওয়ার পর চাঁদপুর গ্রামে কাছাকাছি আরও এক জায়গায় অবাধে মাটি কেটে পাচার করা হচ্ছে। সেখানেও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই কাজ চলছে বলে বাসিন্দাদের দাবি।


    সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একটি জেসিবি দিয়ে মাটি কেটে অসংখ্য ট্রাক্টরে বোঝাই করা হচ্ছে। ওই ট্রাক্টরগুলিও কান্দি মাস্টার প্ল্যানের বাঁধের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। ট্রাক্টর যাতায়াতের ফলে বাঁধের অনেক জায়গায় গর্তও হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, সবকিছু জেনেও তাঁদের চুপ থাকতে হচ্ছে। কারণ মাটি ও বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস তাঁদের নেই। তার উপর যে জায়গায় এসব কাজ হচ্ছে সেখানে সচরাচর কেউ যেতে সাহস করে না। বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় অপরিচিত ব্যক্তির দেহও পাওয়া গিয়েছে। এমনকী দুর্গম এলাকার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নজর দেওয়া সম্ভব হয় না বলে তাঁদের দাবি। আর এই কারণেই পাচারকারীরা এই এলাকা বেছে নিয়েছে। এ বিষয়ে ভরতপুর-১ বিএলএলআরও আনন্দমোহন মাইতি বলেন, অবৈধ মাটি ও বালি পাচারের খবর পেলেই আমরা অভিযান চালাই। ওখানেও বালি ও মাটি পাচার আটকাতে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেচদপ্তরের কান্দি মহকুমা আধিকারিক সুনীলকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, কান্দি মাস্টার প্ল্যানের বাঁধের উপর দিয়ে ট্রাক্টর যাতায়াতের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)