সংবাদদাতা, কাঁথি: নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল কাঁথি মহকুমা আদালত। বুধবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করেন বিশেষ পকসো কোর্টের বিচারক অজয়েন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ঘটনাটি ঘটেছিল রামনগর থানার উত্তর তেঁতুলতলা এলাকায়। পকসো ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও দু’বছর অতিরিক্ত সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই সাজার পাশাপাশি নির্যাতিতাকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাঁথি আদালতের পকসো কোর্টের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ সাজা বলে আইনজীবীরা জানান।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ২০১৮ সালে। নাবালিকার বাবা-মা স্থানীয় বেলতলা এলাকায় ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করত। সেখানে অস্থায়ী ঠিকানায় বেশিরভাগ সময় থাকত তারা। এদিকে বাড়িতে দাদু-দিদার কাছে ছোট ভাইকে নিয়ে থাকত বছর তেরোর ওই নাবালিকা। প্রায়ই সন্ধ্যার সময় কাজের শেষে ছেলে ও মেয়েকে দেখার নাম করে আসত ওই যুবক। আর বাড়িতে সুযোগ বুঝে নাবালিকা কন্যার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করত। কাউকে জানালে ফল ভালো হবে না বেল সে মেয়েকে ভয় দেখাত। প্রথমে ভয়ে কাউকে না জানালেও পরে মাকে বাবার কুকীর্তির কথা জানায় নাবালিকা। প্রতিবাদ করলে স্ত্রীকে মারধর করে নাবালক-নাবালিকা সন্তান সহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় ওই যুবক।
এরপর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। পুলিস ধর্ষণ ও পকসো মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। মামলার সরকারি আইনজীবী দীপান্বিতা বেরা বলেন, মাত্র একমাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী অফিসার। অভিযোগকারী, নির্যাতিতা সহ আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ সহ অন্যান্য প্রক্রিয়ার পর গত ১৩জানুয়ারি যুবককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এদিকে এই রায়ে নির্যাতিতার মা সহ পরিবারের লোকজন খুশি হয়েছেন। যদিও সাজাপ্রাপ্তের পরিবারের তরফে হাইকোর্টে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।