পঞ্চায়েতের ফান্ড থেকে চারমাস ধরে চলছে ত্রাণ শিবির, তিনবেলা খাবার দিতে নাভিশ্বাস
বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: ত্রাণ শিবির চালাতে গিয়ে দেনার দায়ে জর্জরিত ডাবগ্রাম-১ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। গত বছর বর্ষায় তিস্তার গ্রাসে লালটং বস্তি ও চমকডাঙির গৃহহারা পরিবারগুলি আশ্রয় নেয় গ্রাম পঞ্চায়েতে শালুগারার একটি স্কুল ভবনে। প্রশাসনের উদ্যোগে চলা ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া অসহায় মানুষের তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। যা চালাতে গিয়েই নাভিশ্বাস উঠছে এখন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি নির্দেশ মতো ডাবগ্রাম-১ গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রাণ শিবিরে খাবারের ব্যবস্থা করে চলেছে। কিন্তু আজও সেই খাবারের জন্য খরচের কোনও টাকা প্রশাসনের তরফে মেলেনি বলে জানান ডাবগ্রাম-১ পঞ্চায়েতের প্রধান আরতি রায়। তিনি বলেন, শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত খাবারের খরচের কোনও টাকা ব্লক বা জেলা প্রশাসনের থেকে আমরা পাইনি। গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকে সাত লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। তারপরও ধারদেনা করে চাল, ডাল, সব্জি কিনে আনা হচ্ছে। দোকানদাররা বাকিতে জিনিস দিলেও এখন বকেয়া টাকার জন্য তাঁরা তাগাদা দিচ্ছেন। আমাদের কাছে টাকা নেই। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। মৌখিক আশ্বাসও পেলেও টাকা আজও পাইনি।
এই অবস্থায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ৫০ জনেরও বেশি মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। প্রতিদিনই ডাল, ভাত ও সব্জির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রধান বলেন, তব এটা বাঁচোয়া যে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার থেকে খাবার দেওয়া হয়। তখন এঁদের পাতে আমিষ খাবার থাকে। আমাদের কিছুটা সুবিধা হয়। কিন্তু এভাবে আর কত দিন ত্রাণ শিবিরে খাবারের ব্যবস্থা করা যাবে, বুঝতে পারছি না।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের এই এলাকার সদস্য মণীষা রায় সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই সমস্যার সুরাহা হবে।
এদিকে, ডাবগ্রাম-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এখন তাকিয়ে আছেন লালটং বস্তি, চমকডাঙির গৃহহারা এই পরিবারগুলির বিকল্প জমির ব্যবস্থা করার দিকে। তিনি বলেন, বন বিভাগের তরফে একটি জায়গা নিয়ে আপত্তি উঠেছিল। পরবর্তীতে এঁদের পুনর্বাসনের জন্য ফাঁপড়ি, শিবনগর সহ তিনটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে সবকিছু খতিয়ে দেখে আলোচনা চলছে। আশা করছি, দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা তথা জমি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।