নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, রাজগঞ্জ: চা শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ঠিকমতো জমা পড়ছে না। ঘুঘুর বাসায় পরিণত হয়েছে পিএফ অফিস। এর পিছনে রাজনৈতিক যোগসাজশ রয়েছে। বুধবার জলপাইগুড়ির রানিনগর শিল্পতালুকে শ্রমিক সমাবেশ থেকে এমনটাই অভিযোগ করেন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এনিয়ে পিএফ অফিসের সামনে ঘেরাও বিক্ষোভের ডাক দেন তিনি। বলেন, ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়িতে পিএফ অফিস ঘেরাও করা হবে। শীঘ্রই জলপাইগুড়িতেও ওই কর্মসূচি হবে।
দল বা সংগঠনের অনুমোদন ছাড়া আইএনটিটিইউসি’র নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি শ্রমিকদের কোনও আশ্বাস দেন, তার দায় আমরা নেব না বলে জানিয়ে দেন ঋতব্রত। বলেন, সাদা কাগজে কিছু লিখে দিয়ে যদি কেউ ‘শ্রমিক দরদি’ সাজার চেষ্টা করেন, তা চলবে না। মাথায় রাখতে হবে, সংগঠনের পতাকা লাগিয়ে দিলাম আর ইউনিয়ন করে ফেললাম, এমনটা হয় না। রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে। শুনলাম কেউ কেউ নাকি সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছেন। এসব করে লাভ নেই। পিছন থেকে দলের ব্যানার সরে গেলে কোনও দাম নেই।
সমাবেশে ছিলেন মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, দলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি তপন দে প্রমুখ। বিভিন্ন চা বাগান থেকে অনেকে এদিন তৃণমূলে যোগ দেন।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত তৃণমূল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সমাবেশের মঞ্চ থেকে ঋতব্রতর তোপ, চা শ্রমিকদের মজুরি থেকে পিএফের অংশ হিসেবে যে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা জমা পড়ছে না। বাগান মালিকদের একাংশ শ্রমিকের পিএফ বাবদ কাটা কোটি কোটি টাকা বয়েকা রেখেছেন। অথচ তাঁদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে। কোন বাগানে কত টাকা পিএফে বকেয়া তার তথ্য দেওয়া হোক। আইএনটিটিইউসি’র তরফে অবশ্য প্রতিটি বাগানে শ্রমিকদের কত টাকা পিএফ বকেয়া, তার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে
জানান সাংসদ।
কেন্দ্রকে বিঁধে তাঁর তোপ, কেন্দ্রের নীতির কারণে গোটা দেশে সংগঠিত শ্রমিকের সংখ্যা কমছে। শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করতে শ্রম কোড চালুর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এর বিরোধিতা করেছিলেন। এখন বিজেপির শ্রমিক সংগঠনও বিরোধিতা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উদ্যোগে রাজ্যে অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চলছে, তা থেকে একজনও যাতে বাদ না পড়েন, সেব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে আইএনটিটিইউসি’কে। এজন্য প্রতিটি এলাকায় বেশি করে ক্যাম্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করে তা জমা দিতে হবে শ্রমদপ্তরে।