• হামলার চিত্রনাট্য তৈরি জেলা সংশোধনাগারেই!
    বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: সংশোধনাগারে বসেই যোগাযোগ। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই বুধবার দুপুরের পর গোয়ালপোখর-১ ব্লকের ইকরচালা কালীবাড়ি এলাকায় পুলিসের উপর হামলা। গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থা প্রিজন ভ্যানে প্রহরারত এক এএসআই ও এক কনস্টেবল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, গোটা ঘটনার চিত্রনাট্য তৈরি হয়ে থাকতে পারে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে বসেই। সেখান থেকেই বাইরে থাকা অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত খুনের মামলার বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাক আলম (২৬)। এদিন সেই পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হয় বলে অনুমান পুলিসের। 


    বিচারাধীন বন্দি ছিল রায়গঞ্জ পুলিস জেলায় ও ঘটনাটি ঘটে ইসলামপুর পুলিস জেলায়। তাই এই বিষয়ে দুই পুলিস জেলা সমন্বয় রেখে দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে। ইসলামপুর পুলিস জেলার এসপি জবি থমাস বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। গাড়িতে তিনজন অভিযুক্ত ছিল। কোথা থেকে কীভাবে তারা অস্ত্র পেয়েছে তদন্ত চলছে। আমরা বিহার পুলিসের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। এদিকে সাজ্জাকের সঙ্গে সংশোধনাগারে কারা দেখা করতে আসত, তারাও এখন রায়গঞ্জ পুলিস জেলার পুলিসের নজরে। জানা গিয়েছে, সাজ্জাকের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা মাঝেমধ্যেই সংশোধনাগারে দেখা করতে আসত। ইতিমধ্যে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিস। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সংশোধনাগারের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ। পাশাপাশি সাজ্জাককে খুঁজতে পুলিস হন্যে হয়ে তল্লাশি শুরু করেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায়  শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। কারণ ঘটনাস্থলের এক থেকে দেড় কিমির মধ্যেই বিহার সীমান্ত। অনুমান করা হচ্ছে সাজ্জাক বিহারেও পালিয়ে যেতে পারে। 


    সূত্রের খবর, করণদিঘি থানা এলাকার একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত ছিল সাজ্জাক। গত চার বছর রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারের আবাসিক হিসেবে রয়েছে সে। বুধবার সকালে তাকে সহ তিন বিচারাধীন বন্দিকে পুলিস নিয়ে যায় ইসলামপুর মহকুমা আদালতের উদ্দেশ্যে। জানা গিয়েছে, আদালতে বিচারপর্ব মিটিয়ে ফেরার পথে একেবারে সিনেমার কায়দায় সাজ্জাক পুলিসের উপর হামলা করে। তবে পুলিসের উপর হামলা ও বন্দি পালানোর বিষয়টিতে একা সাজ্জাক নাকি আরও কেউ বা কারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল, তা নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে। 


    সূত্রে খবর, এদিন সংশোধনাগার থেকে সাজ্জাক সহ তিন ন বিচারাধীন বন্দিকে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুলিসের উপর হামলার ঘটনার পর সাজ্জাকের কোনও খোঁজ না পাওয়া গেলেও বাকি দুই মহিলা বিচারাধীন বন্দি পালাতে পারেনি। তাঁরা পুলিসের হেফাজতেই রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)