প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে শ্যুটআউট গোয়ালপোখরে, পুলিসকে গুলি করে ফেরার গ্যাংস্টার
বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, ইসলামপুর: একেবারে ফিল্মি কায়দা। ইসলামপুর আদালত থেকে রায়গঞ্জের সেন্ট্রাল জেলে ফেরার পথে দুই পুলিসকর্মীকে গুলি করে পালাল বন্দি। খুনের মামলায় বিচারাধীন সে। জায়গাটি বিহারের পাহাড়কাট্টা এলাকা সংলগ্ন। বুধবার বিকেলে উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়ার এই ঘটনায় তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে। গুলিতে মারাত্মক জখম এএসআই নীলকান্ত সরকার ও কনস্টেবল দেবেন বৈশ্যকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হয়ে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের উত্তর বা দক্ষিণ, কোনও প্রান্তেই পাহারাদার পুলিসকে গুলি চালিয়ে বন্দি পালানোর ঘটনার নজির নেই। পলাতক বন্দির নাম সাজ্জাক আলম, তার বাড়ি করণদিঘি থানার ছোট শাহারে। ২০১৯ সালে করণদিঘির পোলট্রি কারবারি সুবেশ দাস নামে এক ব্যক্তিকে খুন ও কয়েক লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্যাংস্টার সাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। সেই মামলার কাস্টডি ট্রায়াল শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণও।
এদিন মামলার শুনানি শেষে প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে সাজ্জাক সহ মোট তিনজনকে রায়গঞ্জ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঞ্জিপাড়ায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে একরচালা কালী মন্দিরের কাছে এসে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হবে বলে পাহারাদার পুলিসকর্মীদের আর্জি জানায় সাজ্জাক। সঙ্গে থাকা অন্য দুই মহিলা আসামির পাহারায় ছিলেন লেডি কনস্টেবলরা। কম্বলমুড়ি দিয়ে প্রিজনভ্যান থেকে নামা সাজ্জাকের উপর নজর রাখতে সঙ্গে নামেন ওই এএসআই ও কনস্টেবল। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, শৌচকার্য সেরে ফিরে আসা মাত্রই গায়ে জড়ানো কম্বল সরিয়ে পিস্তল বের করে পরপর গুলি চালায়। এরপর জাতীয় সড়কের ওই নির্জন অংশ ধরে দৌড় লাগায় সাজ্জাক। একরচালা কালীবাড়ি এলাকার এক ব্যবসায়ী গুলির আওয়াজে বেরিয়ে এসে দেখেছেন, পাঞ্জিপাড়ার দিকে দৌড়ে পালাচ্ছিল ওই বিচারাধীন বন্দি।
সাজ্জাকের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র এল কোথা থেকে? আগে থেকে জোগাড় করা নাকি পুলিসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া? তদন্তকারীদের একটি বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। রায়গঞ্জ সেন্ট্রাল জেলে বসেই সহযোগীদের সঙ্গে পালানোর পুরো ছকটা কষেছিল সাজ্জাক। ইসলামপুর আদালতেই তার কোনও সহযোগী কোনওভাবে আগ্নেয়াস্ত্রটি সরবরাহ করেছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিস সুপার জে বি থমাস বলেন, জখম পুলিস কর্মীদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ করা হচ্ছে বিহার পুলিসের সঙ্গেও।