• ‘কপালে দুর্গতি আছে’, কেউকেটা হয়ে ওঠা নেতাদের কড়া বার্তা অভিষেকের 
    বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দলের শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে কেউ নন। যাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করবেন, দল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যে পিছপা হবে না, তা আবারও স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।  


    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর বলে থাকেন তৃণমূল কংগ্রেস হল মানুষের দল। জনসেবাই হল এই দলের মূল ভিত্তি। কিন্তু ইদানীং দলের বেশ কয়েকজন নেতার কর্মকাণ্ড তৃণমূলকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। কোথাও নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করছেন, আবার কোথাও অভিযোগ উঠছে, এলাকা দখল করতে চাইছেন কেউ কেউ! আর তার জেরে বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোলের ঘটনাও ঘটছে বিভিন্ন জায়গায়। মালদহে সদ্য পরপর দুটি খুনের ঘটনা রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। দলীয় নেতাদেরই একাংশ এজন্য হাজির করছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব! এতে রাজনৈতিক অস্ত্র হাতে পাচ্ছে বিরোধীরা। 


    এই প্রেক্ষাপটেই বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতায় দাঁড়িয়ে কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, কিছু লোক ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন, নিজেদের কেউকেটা ভাবছেন! আগামী দিনে তৃণমূলের দরজা তাঁদের জন্য বন্ধই থাকবে। এলাকা দখল করে মৌরসিপাট্টার মতো দল চালাবেন বলে যাঁরা ভাবছেন, তাঁদের কপালে বিপদ আছে। কিছু অবাঞ্ছিত ঘটনা যাঁরা ঘটাচ্ছেন, তাঁদের কেউই পার পাবেন না। বস্তুত, তৃণমূলের পরিধি এখন অনেক বিস্তৃত হয়েছে। সংসদ, বিধানসভা, জেলা পরিষদসহ ত্রিস্তর পঞ্চায়েত, পুরসভা—সর্বত্রই তৃণমূলের জয়জয়কার। পরিধিতে যত বড় হয়েছে, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিবাদ তত চলে এসেছে সামনে। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড উল্লেখ করেছেন, লক্ষাধিক দলীয় পদাধিকারী, ৫০ হাজারের উপরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তৃণমূলের। এত বড় পরিবারে মনোমালিন্য থাকতেই পারে। একটি পরিবারে ছ’জন থাকলে, চারজনের মধ্যে ঝগড়া হতে পারে। কিন্তু দলের কেউ যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবেন, সেটা হবে না। যে বা যাঁরা দলকে দুর্বল করতে চাইছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। 


    ইতিমধ্যে ভাঙড়ে অশান্তির জেরে আরাবুল ইসলামকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। আবার দল বিরোধী কাজের জন্য প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। অভিষেক বলেছেন, অপরাধ বা অন্যায় করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিস-প্রশাসন সংশ্লিষ্ট তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করেছে। আগামী দিনেও এমন ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যতিক্রম ঘটবে না। 


    সম্প্রতি শিল্পীদের ‘বয়কট’ প্রসঙ্গে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে অভিষেকের কড়া জবাব, ‘বয়কট করো, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়কটের রাজনীতি তৃণমূল করে না।


    বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। অভিষেক বলেছেন, বাংলার ২৯৪টি আসনেই জেতার জন্য লড়ব আমরা।
  • Link to this news (বর্তমান)