নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাসপোর্টকাণ্ডে অভিযুক্ত সমরেশ বিশ্বাসের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে আরপিও এবং সেবাকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের কাছে। ব্যাঙ্ক লেনদেনের নথি ঘেঁটে এই তথ্য এসেছে লালবাজারের হাতে। তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট আরপিও এবং সেবা কেন্দ্রের সেসব কর্মীদের চিহ্নিত করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
পাসপোর্টকাণ্ডের তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিসের অবসরপ্রাপ্ত এএসআইয়ের সঙ্গে সমরেশের লেনদেনের সূত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা। দেখা যায়, সমরেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৪-১৫ লক্ষ টাকা এসেছে আব্দুলের অ্যাকাউন্টে। ধৃত সমরেশ জানায়, নথি যাচাই না করেই পাসপোর্টের আবেদন পোর্টালে আপলোড করার বিনিময়ে এই টাকা দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত প্রাক্তন এএসআইকে। অবসরপ্রাপ্ত ওই অফিসারও তদন্তকারীদের জানান, এই টাকা তিনি ঘুষ হিসেবেই পেয়েছেন। সমরেশ জেরায় অফিসারদের জানায়, শুধু ওই অফিসারই নন, আরপিও’তে নথি যাচাই ও গ্র্যান্টিংয়ের দায়িত্বে থাকা অফিসারদের কাছে সে নিয়মিত ভেট পাঠাত। এমনকী টাকাও পাঠাত প্রতিমাসে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের পাসপোর্ট করার সুযোগ করে দিয়ে এই অফিসাররা টাকা নিতেন। এমনকী ব্রাবোর্ন রোডে আরপিও অফিসের কর্মীদের একাংশ তার ‘পে রোলে’ ছিল বলে জানিয়েছে সমরেশ। তাঁদের কাছে নিয়মিতভাবে টাকা গিয়েছে বলে অভিযোগ। পাসপোর্ট কোন ঠিকানায় ছাড়া হচ্ছে, এই তথ্য তাঁদের কাছ থেকে পেত সমরেশ। একইসঙ্গে বিভিন্ন জেলার পোস্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের কর্মীদের কাছে সমরেশ মোটা অঙ্কের টাকা পাঠাত, তা জেরায় জেনেছে পুলিস। এরপরই তার লেনদেনের নথি ব্যাঙ্ক থেকে চাওয়া হয়। পাসপোর্ট জালিয়াতিতে আরপিও এবং সেবাকেন্দ্রের যে সমস্ত কর্মী সমরেশকে সাহায্য করছিল, নির্দিষ্ট করে তাদের কাছেই টাকা পৌঁছেছিল। তদন্তকারীরা বলছেন, টাকার অঙ্কের পরিমাণ যথেষ্ট ভালো। এর ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জেরার জন্য ডাকা হবে বলে জানা গিয়েছে।