এই সময়: নতুন করে বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন করালে বাঘাযতীন লাগোয়া বিদ্যাসাগর কলোনির হেলা বাড়ির জায়গায় নতুন নির্মাণের অনুমতি দেবে কলকাতা পুরসভা। বুধবার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। তবে সবার আগে হেলে পড়া চারতলা আবাসনটি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হবে।
বুধবারও সারা দিন হেলে পড়া বাড়িটি ভাঙার কাজ হয়। রাবিশ সরিয়ে পুরো জমিটা ফাঁকা করে, টিন দিয়ে ঘেরার ব্যবস্থা করা হবে। কলকাতা পুরসভার তরফে পুলিশের কাছে হেলে পড়া বাড়ির ফ্ল্যাটগুলির মালিক, জমির মালিক এবং ডেভেলপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বুধবার সারা দিন ডেভলপারের খোঁজ চালায় পুলিশ, তবে রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তারির খবর মেলেনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিশেষজ্ঞরাও এই দিন ঘটনাস্থলে যান। পুরসভা তাঁদের থেকেও রিপোর্ট এবং পরামর্শ নেবে।
পুলিশ ও পুরসভা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, বিদ্যাসাগরে হেলে পড়া চারতলা বাড়ির অনুমোদিত প্ল্যান নেই। ফ্ল্যাটগুলির কমপ্লিশন সার্টিফিকেট (সিসি) ছিল না। সূত্রের খবর, জমির মিউটেশন হয়েছিল, কিন্তু ফ্ল্যাটের হয়নি। তবে ফ্ল্যাটের মালিকরা পুরসভায় সম্পত্তিকর দিতেন। জল, নিকাশি, বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ওখানে বসবাস শুরু হয়ে গিয়েছিল।
পুরসভার রাজস্ব বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘সিসির সঙ্গে রাজস্ব নেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। পুরসভা পরিষেবা দিলে, কর নেবে।’ তবে এই বিতর্ক ঘিরে অভিযোগ ওঠে, রাজস্ব ও বিল্ডিং বিভাগের মধ্যে দীর্ঘদিন সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তবে বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘আগে বিল্ডিং রুলস যাঁরা অমান্য করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে যদি কেউ ওই জমিতে বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন করিয়ে আবাসন করতে চান, সেই অনুমতিও আমাদের থেকেই নিতে হবে।’
বুধবারও সারাদিন এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলে। কাউন্সিলারের পদত্যাগ চেয়ে বামফ্রন্টের তরফে এলাকায় মিছিল ও বিক্ষোভ করা হয়। এর মধ্যেই গঙ্গাসাগর থেকে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, ‘বাম আমলের পাপ বহন করতে হচ্ছে আমাদের।’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন সিপিএম মেয়র তথা বর্তমান সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য পুরসভার শীর্ষপদে থাকাকালীন সময়ে কলোনি এলাকায় বাড়ি নির্মাণের জন্য কিছু নিয়ম শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও প্রাক্তন মেয়র বিকাশের বক্তব্য, ‘মানুষের স্বার্থে বাড়ি নির্মাণে ছাড় দেওয়া মানে বাড়ির কাঠামো বদলে ছাড় দেওয়া নয়। এই সমস্যা তো বাড়িটার কাঠামো বদলে দেওয়ার জন্য হয়েছে। একটা বাড়ি হেলে থাকলে, কাউন্সিলার পুরসভাকে জানাবেন না? প্রশাসনিক ব্যর্থতা সামনে এলেই বাম বাম করা রোগ হয়েছে।’