• অজয়–দামোদর লাগোয়া এলাকাতেও বালি অমিল, বন্ধ বাংলার বাড়ির কাজ
    এই সময় | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সঞ্জয় দে, দুর্গাপুর

    বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অজয় ও দামোদরের জল। পাড়ে বালির রাশি। অথচ সেই বালি কিনতে নদী লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদেরই পকেট খালি হয়ে যাচ্ছে!

    রাজ্য সরকারের বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হতেই বালির দাম চড়েছে কয়েকগুণ। এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল জেলা ও মহকুমা প্রশাসন। মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে বালি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কিন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। চড়া দামে বালি কিনতে হচ্ছে উপভোক্তাদের। বালির অভাবে অনেকের বাড়ি তৈরির কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

    দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বে ঠিকই। তবে বালির মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিক। সমস্যা সমাধানে সমস্ত ব্লকের বিএলআরওদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। কোথায় কোথায় বালি মজুত করে রাখা হয়েছে, তারও খোঁজ করা হচ্ছে। নায্য মূল্যে বালি সরবরাহের চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।’

    বুদবুদ থানার রণডিহা, চাকতেঁতুল, সাতুড়ি— এই সব এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দামোদর থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালি তোলা হচ্ছে রাতের অন্ধকারে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এক ট্র্যাক্টর বালি তোলার জন্য লেবার খরচ প্রায় ২০০ টাকা। নদী থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের গ্রামে যাতায়াতের জন্য প্রতি ট্রিপে ডিজ়েল ও চালকের বেতন বাবদ প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে খরচ ৪০০ টাকা।

    কিছুদিন আগেও এক ট্র্যাক্টর বালি বিক্রি হতো ৮০০ টাকায়। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হতেই এক ট্র্যাক্টর বালির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই হাজার টাকা। একই ছবি দুর্গাপুর–ফরিদপুর ব্লকেও। অজয় সংলগ্ন এই এল‍াকাতেও বালি পাওয়া যাচ্ছে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে অজয় থেকে বালি তুলে মজুত করে রাখছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। যার জেরে বাজারে দাম বাড়ছে। দম কমানোর জন্য দুর্গাপুর–ফরিদপুর ব্লকের বিডিওর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী।

    একই ছবি দুর্গাপুর মহকুমার প্রতিটি ব্লকে। বালির মূল্যবৃদ্ধির কথা স্বীকার করে নিয়ে কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘সমস্যা তো হচ্ছে। সঠিক সময়ে ও ন্যায্য দামে বালি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।’ অন্ডাল ব্লকের এক বাংলার বাড়ির উপভোক্তা বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও এক ট্রলি বালির দাম ছিল দেড় হাজার টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকা। বালি কিনতে মোটা টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। ইট–সিমেন্ট কিনব কী ভাবে?’

  • Link to this news (এই সময়)