• ঘরে ফিরছেন পুণ্যার্থীরা, বিদায়ের সুর গঙ্গাসাগরে
    এই সময় | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, গঙ্গাসাগর: মহাকুম্ভের বছরেও সাগরমেলায় অকল্পনীয় মানুষের ভিড় ছাপিয়ে যেতে চলেছে গত বছরের রেকর্ডকেও। সাগরমেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কথায়, ‘বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী সমাগম হয়েছে সাগরে।’

    বুধবার ছিল পয়লা মাঘ। অনেকেই এই শুভ দিনে পুণ্যস্নান করেন সাগরে। বিশেষ করে, সাগরদ্বীপের মানুষের কাছে এই দিন খুব শুভ। দুপুর পর্যন্ত সাগরতটজুড়ে পুণ্যার্থী সমাগম ভালোই ছিল। তবে বিকেলের পর থেকে মেলা জুড়ে বিদায়ের সুর বেজে উঠেছে। ভিড় পাতলা হয়েছে। সাগরমেলার দু’টি বাস স্ট্যান্ডে পুণ্যার্থীদের ঘরে ফেরার লাইন পড়েছে। কাকদ্বীপের লট নম্বর আট ও সাগরের কচুবেড়িয়া দিয়ে ফিরছেন পুণ্যার্থীরা। তবে আগামী সপ্তাহখানেক স্থানীয় বাসিন্দারা সাগরস্নান করতে আসবেন।

    মেলা উপলক্ষে কয়েকশো দোকানি পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। সেই দোকানগুলিতেও আগামী কয়েকদিন চলবে কেনাকাটা। সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা এই মেলা থেকেই কেনাকাটার অপেক্ষায় থাকেন। এ বার মেলা শুরু হয়েছিল ৮ জানু্য়ারি। মূলত জানুয়ারির শুরু থেকেই পুণ্যার্থীর ভিড় জমতে থাকে সাগরমেলায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৬ জানুয়ারি সাগরমেলার প্রস্তুতি দেখতে আসেন। জেলা প্রশাসন তার আগে থেকেই মেলার পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ করে।

    এ দিন মেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘এ দিন সকাল পর্যন্ত পুণ্যযোগ ছিল। ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছিল কয়েক দিনে। সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় তীর্থযাত্রীরা স্নান করে কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিয়ে নিরাপদে ফিরেছেন। প্রতি মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারি ও তাঁর নির্দেশে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় এই কাজ সম্ভব হয়েছে।’ সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু, পুলক রায়, বঙ্কিম হাজরা, রথীন ঘোষ ও স্নেহাশিস চক্রবর্তী। এ বার মেলায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এ দিনও দুই অসুস্থ পুণ্যার্থীকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মেলায় আসা ১৫ লক্ষ পুণ্যার্থী বন্ধন অ্যাপের মাধ্যমে নিজের ছবি দেওয়া রাজ্য সরকারের শংসাপত্র নিয়েছেন।

    এ দিন পর্যন্ত মেলায় নিখোঁজ হন ৬৬৩২ জন। তার মধ্যে ৬৬২৭ জনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। মেলায় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৮৯৫ জন। সরকারি ভাবে মেলা চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীদের নিশ্চিন্তে সাগরস্নানের পাশাপাশি কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দিয়ে নির্বিঘ্নে ফিরে যাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। এখনও যে সমস্ত পুণ্যার্থী মেলায় আছেন, তাঁদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দের বিষয়টিও নজরে রাখা হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)