• জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহের পুজো এ বার দেখুন জায়ান্ট স্ক্রিনে
    এই সময় | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি

    শিব চতুর্দশীতে জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হবে জল্পেশ গর্ভগৃহের পূজো। শিবরাত্রিতে এ বার এমনই উদ্যোগ নিতে চলছে জল্পেশ ট্রাস্টি বোর্ড। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ কোটি টাকা জল্পেশ মন্দিরের জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। এর পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর সেই কাজের বরাত পায়।

    ইতিমধ্যে মন্দির সংস্কারের পাশাপাশি স্কাইওয়াক তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। শিবরাত্রির আগে জল্পেশ মন্দিরকে ঢেলে সাজাবার কাজও প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মন্দিরের পাশাপাশি মেলার মাঠের চত্বরটিও সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হচ্ছে।

    শিবরাত্রি উপলক্ষে প্রতি বছরই হাজার হাজার মানুষের ভিড় থাকে জল্পেশ মন্দিরে। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় মন্দির কমিটিকে। মেলা চত্বরে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ এই মেলার পরিচালনা করে। প্রায় এক সপ্তাহের বেশি ধরে চলে মেলা। এ সবের মধ্যে মূল আকর্ষণ থাকে জল্পেশের গর্ভগৃহের বিশেষ পুজো। সেখানে সকলের প্রবেশাধিকার থাকে না। সীমিত সংখ্যক মানুষ পুজোর সময়ে গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারেন পুজো চলাকালীন।

    সকলকে সেই পুজো সরাসরি বড় পর্দায় দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন পুজোর পরিচালকরা। জল্পেশ ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, ‘প্রতিবারই জল্পেশে ভিড় বাড়ছে। চলতি বছরেও তাই সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা আগেভাগে নেওয়া হচ্ছে। শিবরাত্রিতে মন্দিরের গর্ভগৃহে বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে উপস্থিতির সংখ্যা সীমিত থাকার দরুণ অনেকেই সেই মুহূর্ত থেকে বঞ্চিত হন। তাই জনসাধারণের কথা চিন্তা করে জায়ান্ট স্ক্রিনে এবার পুজো দেখানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷’

    পুজো উপলক্ষে ইতিমধ্যে সাজ সাজ রব জল্পেশ মন্দিরে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহুয়া গোপ বলেন, ‘জল্পেশ মেলা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য বহন করে। মেলাকে ঢেলে সাজাবার জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। মেলার মূল মাঠে সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরি হয়েছে। এখানে কয়েকদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।’ খুবই গুরুত্ব পাচ্ছে নিরাপত্তা ও পুণ্যার্থীদের জন্য আয়োজন। বিশেষ করে তিন বছর আগের দুর্ঘটনার পরে আরও বেড়েছে তৎপরতা।

    ২০২২ সালে পুজো শেষে ফেরার পথে গাড়িতে শর্ট সার্কিটে প্রাণ হারান ১০ জন পুণ্যার্থী। জখম হন প্রায় ২০ জন। সেই ঘটনার পরে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মন্দিরের ভিতরে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বছর দুয়েক মন্দিরের বাইরে থেকে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মন্দির কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত শ্রাবণ মাসে শর্তসাপেক্ষে পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়। এখন ৫০ জনকে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

    ভিড় এড়াতেই মন্দির কমিটির দাবি মতো এসজেডিএ–র তরফে মন্দির চত্বরে তৈরি করা হয় স্কাইওয়াক। সেটির নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ। তবে এখনও চালু হয়নি। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুমুদরঞ্জন রায় বলেন, ‘জল্পেশ মন্দিরের উন্নয়নে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আশা করি, তাঁর হাত দিয়েই চালু হবে স্কাইওয়াক।’

  • Link to this news (এই সময়)