• 'এই স্যালাইন তো অন্য রাজ্যেও চলছে...' মেদিনীপুর কাণ্ডে ডাক্তারদের উপর ক্ষুব্ধ মমতা
    আজ তক | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্যে। সরকারি হাসপাতালে সংক্রমিত স্যালাইন ব্যবহারের জেরে রোগীমৃত্যুর ঘটনায়  কলকাতা হাইকোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। সেই স্যালাইনকাণ্ডে এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সেই ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশ করে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানালেন, চিকিৎসকদের গাফিলতি ছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ডের কথাও ঘোষণা করা হয় নবান্ন থেকে। নাম করে করে প্রত্যেকের গাফিলতি চিহ্নিত করেন মুখ্যমন্ত্রী।

    এদিন নবান্নে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য। নবান্নের সভাগৃহ থেকে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিনিয়র চিকিৎসকদের নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'প্রসূতির চিকিৎসার সময় সিনিয়র ডাক্তাররা উপস্থিত ছিলেন না। চিকিৎসকেরা ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করলে মাকে বাঁচানো যেত।' এদিন তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি বলেন, 'অস্ত্রোপচারের সময় নিয়ম মানা হয়নি। প্রসূতির মৃত্যুতে গাফিলতি রয়েছে। আরএমও উপস্থিত ছিলেন না। জুনিয়র চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করেন। সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়নি। দু'টি ওটি টেবিলে অপারেশন করা হয়েছিল। নির্দিষ্ট প্রোটোকল মানা হয়নি।'

    সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এ-রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর যে উন্নয়ন হয়েছে, তা কোথাও হয়নি। মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা বেড়েছে। মেডিক্যালে বেড়েছে সিটের সংখ্যাও। ৪২ টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে।' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন,  'OT-র গেট পর্যন্ত সিসিটিভি কেন থাকবে না? গাফিলতি থাকলে ফৌজদারি অপরাধ কেস টু কেস খতিয়ে দেখতে হবে। OT পর্যন্ত সিসিটিভি অবিলম্বে লাগাতে হবে। না মানলে হাতজোড় করে বলব অন্য রাজ্যে যান।'

    প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পাঁচ প্রসূতি। অভিযোগ, স্যালাইন নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। পরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। এক সদ্যোজাতও প্রাণ হারিয়েছে। এই ঘটনায় চিকিৎসকদের দিকে আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। তার পরে জানিয়েছেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির পরেও বাঁচানো যায়নি এক প্রসূতি এবং এক শিশুকে। তাঁর কথায়, ‘যাঁদের কাছে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়, যাঁদের হাতে সন্তান জন্মায়, তাঁরা দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে মাকে এবং সন্তানকে বাঁচানো যেত।’ পাশাপাশি তিনি এদিন বলেন, ওষুধের ডেট পেরিয়ে যাচ্ছে কিনা বা তা ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, তা সবসময় মনিটর করা হয়। যে স্যালাইন কাঠগড়ায়, তা এখনও অন্য একাধিক রাজ্যে চলছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন,  এই স্যালাইন অন্য রাজ্যে চলছে। আমরা ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছি। রি টেস্ট করব।
  • Link to this news (আজ তক)