• বাংলার বাড়ির টাকা ঢুকতেই বাড়ছে মাটির দাম, শুরু অবৈধ কারবারও
    বর্তমান | ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: একসঙ্গে জেলাজুড়ে তৈরি হচ্ছে কয়েক হাজার বাড়ি। স্বাভাবিকভাবেই মাটি ও ইটের চাহিদা ব্যাপক। সেই সুযোগেই বেড়ে উঠেছে মাটি মাফিয়ারা। দর বাড়ানো হচ্ছে মাটির। যার ফলে বাড়ছে ইঁটের দামও। বিপাকে পড়েছেন উপভোক্তারা‌। কারণ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সীমিত পরিমাণ টাকাই দেওয়া হচ্ছে। উপভোক্তা চাইলে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেও বাড়ি বানাতে পারেন। এভাবে ইঁটের দাম বাড়ায় মোটা টাকা নিজেদের পকেট দিতে হবে উপভোক্তাদের। ইটভাটার মালিকদের কথায়, এক ট্রাক্টর মাটির দাম বর্তমানে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। যা কয়েকদিন আগেও চারশো টাকা ছিল। অর্থাৎ দুশো থেকে আড়াইশো টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইটের দাম এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে। আগে এক হাজার ইটের দাম ছিল কমবেশি দশ হাজার টাকা‌। বর্তমানে সেটাই সাড়ে দশ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই দাম বৃদ্ধির ফলে উপভোক্তারা চিন্তায় পড়েছেন। 


    নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখিয়েই তবেই মাটি কাটা যায়। তারপর সেই মাটি ভাটায় নিয়ে গিয়ে ইট তৈরি করা হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ভাটায় ইটের জোগান দেওয়ার জন্য অবৈধভাবে বিভিন্ন জায়গায় মাটি কাটা হচ্ছে। গোটাটাই একটা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে। অবৈধ মাটি কাটার গোষ্ঠীর সঙ্গে ইটভাটার যোগাযোগ থাকে। আবার অনেক ইটভাটার মালিক স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুমতি নিয়ে প্রয়োজনীয় মাটি কেটে ইট বানায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় ৩২৭টি বৈধ ইটভাটা রয়েছে। অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ১৬০টি। অবৈধ ইঁটভাটার নাম পোর্টালে তুলে বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন করানোর কাজ চলছে। 


    উল্লেখ্য, নদীয়া জেলায় ১ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি উপভোক্তা বাংলার বাড়ির টাকা পাবে। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৪৬ হাজার উপভোক্তা প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন। সেইমতো বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে গ্রামীণ এলাকায়। মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। উপভোক্তার চাইলে সেই টাকার সঙ্গে আরোও কিছু টাকি যুক্ত করে ভালো বাড়ি বানাতে পারবেন। তবে এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না মাটি মাফিয়ারা। কারণ একসঙ্গে অনেক বাড়ি তৈরি করা হলে ইটের চাহিদা বাড়বে। ইটের চাহিদা বাড়লে মাটির চাহিদাও বাড়বে। নদীয়া জেলার মৎস কর্মাধ্যক্ষ তথা পলাশীপাড়ার এক ইটভাটার মালিক প্রণয় ঘোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরিব মানুষের মাথায় উপর ছাদ তৈরির টাকা দিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই ইটের চাহিদা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কম দামে মানুষকে ইঁট দিতে।’ চাপড়ার উপভোক্তা মাসুদ শেখ বলেন, ‘বাড়ি তৈরি করতে পারায় খুব ভালো লাগছে। কিন্তু ইটের দাম অনেকটাই বেশি। যার জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে।’


     (আবাসের বাড়ি তৈরির জন্য ব্যাপক ইটের চাহিদা। -নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)