সংবাদদাতা, কাটোয়া: অজয়ের ভাঙনের জেরে ভেঙেছে ঢালাই রাস্তা। যাতায়াত করতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে কাটোয়ার শুনিয়া গ্রামের নদীপাড়ের বাসিন্দাদের। গ্রামের মূল ঢালাই রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় প্রতিবেশীর বাড়ির উঠোন দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা।
কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঋজু সাহা বলেন, ওই রাস্তাটা অজয়ের পাড় বরাবর গ্রামের ভিতর দিয়ে গিয়েছে। বর্ষায় নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় রাস্তাটা ভেঙে পড়েছে। আমরা পঞ্চায়েত থেকে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনকে জানিয়েছি।
কেতুগ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত কাটোয়া ১ ব্লকের কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের শুনিয়া গ্রাম অবস্থিত। গোটা গ্রামে সাকুল্যে এখন ৮০টি পরিবারের বসবাস। গ্রামে নেই কোনও স্কুল। এমনকী ভোট দিতে যেতে হয় ৪ কিমি দুরে পাশের গ্রামে। ২০২১-২২ বর্ষে কাটোয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি থেকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রায় দেড় কিমি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। তার পাশাপাশি তৈরি করা হয় ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি স্নানঘাট। ওই রাস্তাটিই গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় অজয়ের ভাঙনে ভয়ঙ্করভাবে ভেঙে গিয়েছে। কয়েকটি বাড়িও বিপজ্জনক অবস্থায় অজয়ের পাড়ে ঝুলছে। যেকোনও মুহূর্তে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। এখন যাতায়াতের রাস্তা দিয়ে যেতে পারছেন না কেউ। প্রতিবেশী শান্তা হাজরার বাড়ির উপর দিয়ে সবাইকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাতদিন ওই বাড়ির উঠোনই ভরসা বাসিন্দাদের। বড় কোনও যানবাহন ঢুকছে না গ্রামে। শান্তাদেবী বলেন, আমার বাড়ির উপর দিয়েই এখন সবাই যাতায়াত করছেন। এতে আমার অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু উপায়ও নেই। রাস্তা সংস্কারের কেউ কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ হাজরা, রাধেশ্যাম হাজরা বলেন, আমরা এবার যাতায়াত করব কীভাবে! ওই রাস্তা দিয়েই বের হতে হয়। আমরা ঘরেই বন্দি হয়ে রয়েছি। অজয়ের পাড় থেকে ক্রমাগত মাটি ধসছে। রাস্তাটা গ্রামের শুরু থেকে এসে স্কুল পর্যন্ত গিয়েছে। বহু কষ্টে প্রশাসনের দরজায় ঘুরে রাস্তা তৈরি হয়েছিল। সেই রাস্তা ভেঙে গেল কয়েক মাস আগে। এখনও পঞ্চায়েত থেকে রাস্তা সারানোর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অজগর সাপের মত অজয় নদ চারিদিক দিয়ে পেঁচিয়ে ধরেছে গ্রামটিকে। এবার গ্রামটাই হয়তো কোনওদিন গিলে খাবে অজয়। আমাদের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। পঞ্চায়েতের দাবি, অজয়ের পাড়ের ওই রাস্তা সংস্কার করতে গেলে আগে সেচদপ্তরকে নদীর পাড়ে শাল-বল্লা দিয়ে বাঁধতে হবে। তারপর রাস্তা সংস্কার করতে হবে। তা নাহলে আবার ভাঙবে ওই রাস্তা। -নিজস্ব চিত্র