রায়গঞ্জ জেলেই পরিচয় দু’জনের, সাজ্জাককে মুক্ত করতে সাহায্য হোসেনের
বর্তমান | ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: পুলিসকে গুলি চালিয়ে বিচারাধীন বন্দি পলায়ন কাণ্ডের নেপথ্যে কি একা আব্দুল? মাদক কারবারের অন্যতম মাতব্বর এবং বাংলাদেশের সঙ্গেও তার নিবিড় যোগাযোগ। পাঞ্জিপাড়া গুলিকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তের পর এমনই অনুমান তদন্তকারীদের। এর জন্য মূল অভিযুক্ত সাজ্জাক আলমের পাশাপাশি আবাল ওরফে আব্দুল হোসেনের (৩৭) নামও মোস্ট ওয়ান্টেড হিসেবে ঘোষণা করেছে ইসলামপুর পুলিস জেলা। তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিস।
পুলিসের এক আধিকারিক বলেছেন,আমরা সাজ্জাক আলমের পাশাপাশি আব্দুল হোসেনেরও খোঁজ করছি। আমরা খবর পেয়েছি সেই আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল সাজ্জাককে। ওই অস্ত্র দিয়েই পুলিসের উপর গুলি চালানো হয়।
বুধবার বিকেলে ইসলামপুর মহকুমা আদালত থেকে রায়গঞ্জ পুলিস সাজ্জাককে প্রিজন ভ্যানে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে নিয়ে যাচ্ছিল। পথে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য গাড়ি থামানো হলে তখনই পুলিসের উপর হামলা হয়। সূত্রের খবর, এই ঘটনার পরপরই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অতি সম্প্রতি রায়গঞ্জ সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাওয়া কয়েকজন সাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। তখনই শুরু হয় বিস্তারিত অনুসন্ধান। নানা তথ্য ও সংশোধনাগারের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়। নানা সূত্রে আবালের যোগ খুঁজে পায় পুলিস। জানা যায়, তার মদতেই আদালত চত্বরে কোনওভাবে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পেয়ে যায় সাজ্জাক। তারপরই এতবড় অঘটন। অস্বস্তিতে পড়তে হয় দুই রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর পুলিস জেলাকে।
কে এই দুষ্কৃতী? কীভাবেই বা সাজ্জাকের সঙ্গে তার পরিচয়? তদন্তকারীদের সূত্রে খবর,আব্দুল হোসেন ও সাজ্জাক দীর্ঘসময় সহবন্দি হিসেবে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে ছিল। সাজ্জাক ২০১৯ সালে করণদিঘির একটি খুনের মামলায় জড়িয়ে রায়গঞ্জ জেলে আসে। অন্যদিকে একটি মাদক পাচার মামলায় তার ঠাঁই হয় রায়গঞ্জ জেলে। সেখানে বসেই জেল থেকে পালানোর ছকও তৈরি করে তারা। কিন্তু মাস দুয়েক আগে তাকে স্থানান্তর করা হয় মুর্শিদাবাদে। কিছুদিন আগে সেখান থেকে সে ছাড়া পেয়ে যায়। এদিকে রায়গঞ্জ সংশোধনাগারে বন্দিদশা কাটাতে থাকে সাজ্জাক। তবে সাজ্জাকের সঙ্গে আবালের যোগাযোগ কখনও সেভাবে বিচ্ছিন্ন হয়নি। এরপরই সাজ্জাককে বন্দিদশা থেকে বের করতে ছক তৈরি হয়। শেষে বুধবার আদালত চত্বরেই কোনওভাবে সাজ্জাকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে দেয় সে। যা দিয়েই কাজ হাসিল করে গা ঢাকা দেয় সাজ্জাক। ইতিমধ্যে পাঞ্জিপাড়া থানার পুলিস এব্যাপারে বেশকিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার থেকে। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সহ বিভিন্ন তথ্য পুলিসের হাতে উঠে এসেছে। সেই সূত্র ধরেই তদন্তের জাল গোটাচ্ছেন তদন্তকারীরা।