নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রসূতি মৃত্যু কাণ্ডে মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে কাদের কাদের গাফিলতি ছিল, তা নির্দিষ্ট করে ফেলেছে সিআইডি। তার ভিত্তিতে গাফিলতি, ষড়যন্ত্র সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ এনে এফআইআরও রুজু করল তদন্তকারী সংস্থা। ডেপুটি সিএমওএইচ-এর অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া ওই এফআইআরে গাফিলতি সহ একাধিক ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের সিনিয়র চিকিসকদের যে গাফিলতি ছিল, রাজ্য প্রশাসনের তরফে সেটা জানানো হয়েছে। মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু স্যালাইনের সংক্রমণে নাকি চিকিৎসকদের গাফিলতিতে, তাই নিয়ে দু’দিন ধরে অনুসন্ধান চালায় সিআইডি। পাশাপাশি হাসপাতালের প্রশাসনিক পদে থাকা ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন করেছেন কি না, তাই নিয়ে খোঁজখবর চলে। অফিসাররা জেনেছেন, হাসপাতালে তিনজন সিনিয়র ডাক্তারের না আসাটাই এখানে রুটিন ছিল। হাসপাতালের ডিউটি আওয়ার্সের মধ্যে তাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে যেতেন। ওটি রুমে ওই চিকিৎসকদের দেখা মিলত কালেভদ্রে। পুরো ব্যবস্থাটাই চলছিল পিজিটিদের উপর ভর করে। এমনকী অপারেশনের সময় কোনও সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের ফোন করা হলে তাঁরা বিরক্ত বোধ করতেন। ঘটনার দিন তিনজন ডাক্তার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ছেড়ে কোন হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে গিয়েছিলেন, সেদিন তাঁরা বাইরে ক’টি অপারেশন করেন, এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছেন সিআইডির তদন্তকারীরা। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বিভাগীয় প্রধান রোগীদের ম্পর্কে তেমন খোঁজখবর রাখতেন না। এমনকী ওয়ার্ড ভিজিটেও যেতেন না বলে জেনেছে সিআইডি। পিজিটিদের উপরই পুরো দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। প্রসূতি মায়ের শারীরিক কী সমস্যা হচ্ছে, তাই নিয়ে যথাযথভাবে খোঁজখবর নেননি হাসপাতালের এমএসভিপি। হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তাররা নেই জেনেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের পথে হাঁটেননি তিনি। একইসঙ্গে বিষয়টি স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তাদেরও জানাননি। এই সমস্ত গাফিলতি ও ব্যর্থতার দায় হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা এড়াতে পারেন না বলে তদন্তকারীদের বক্তব্য। পাশাপাশি ওই স্যালাইন কে চালাতে বলেছিলেন, তার তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। কেস রুজু করার পরই হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, রেজিস্টার বুক সহ বিভিন্ন সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার পথে হাঁটবেন তদন্তকারীরা।