‘বাংলার বাড়ি’: মার্চের মধ্যেই ১২ হাজার ভূমিহীন উপভোক্তার জমি চিহ্নিত করে টাকা ছাড়ার নির্দেশ
বর্তমান | ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যের ১২ লক্ষ প্রান্তিক মানুষের জন্য নিজস্ব কোষাগার থেকে বাড়ি তৈরির টাকা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পঞ্চায়েত দপ্তরের তরফে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনের কাছে টাকা পাঠানো হয়ে গিয়েছে। ট্রেজারির মাধ্যমে সেই টাকা যাচ্ছে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু প্রায় ১২ হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখনও টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি অনুযায়ী, যেখানে একজন উপভোক্তার বাড়ি তৈরি হবে, সেই জমির ছবি নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড হলে তবেই টাকা ছাড়া যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রায় ১২ হাজার উপভোক্তার বাড়ি তৈরির জমি নেই। ফলে রাজ্য সরকার জেলাগুলিকে সমস্ত উপভোক্তার টাকা পাঠিয়ে দিলেও এঁদের বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনগুলির উদ্দেশে রাজ্যের বক্তব্য, একেবারে হতদরিদ্র বলেই এঁদের একফালি জমিও নেই। কিন্তু বাড়ি তৈরির টাকা দ্রুত পাওয়া উচিত তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য, এঁদের প্রত্যেকের মাথার উপর পাকা ছাদের ব্যবস্থা করে দেওয়া। তাই দ্রুততার সঙ্গে এই ‘ভূমিহীন’ উপভোক্তাদের জন্য জমির ব্যবস্থা করে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা পাঠানোর কাজ সেরে ফেলতে হবে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানান, কোনও উপভোক্তাকেই বঞ্চিত হতে দেবে না রাজ্য সরকার। সেই মতো জেলা প্রশাসনকে গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখার কথা বলা হয়েছে। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের টাকা ট্রেজারির মাধ্যমে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে। ফলে মার্চের মধ্যে, অর্থাৎ চলতি অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার আগে জেলা ট্রেজারি থেকে যত টাকা পাঠানো বাকি থাকবে, নিয়মমাফিক সেই টাকা ফেরত চলে যাবে রাজ্যের কোষাগারে বা অর্থদপ্তর পরিচালিত ‘কনসলিডেট ফান্ড অব দি স্টেট’-এ। সেক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন অর্থবর্ষের জন্য বাজেট তৈরি করবে অর্থদপ্তর। তারপর একাধিক পরিষদীয় ও প্রশাসনিক ধাপ পেরিয়ে নতুনভাবে বরাদ্দ হবে দপ্তরের জন্য। তাই জমি চিহ্নিত করে মার্চের মধ্যেই ‘ভূমিহীন’ উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে। বুধবারই সেই নির্দেশ জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর।
প্রকল্পের শুরুতেই যে ‘এসওপি’ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেও ভূমিহীনদের জন্য জমি নিশ্চিত করার বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিছু জেলায় সামান্য কয়েকজন উপভোক্তার জন্য জমি চিহ্নিত হলেও বাকি কাজে আরও গতি আনা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তারা।