নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: একই দিনে তিন জায়গায় আসামীদের হাতে আক্রান্ত হল পুলিস। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর, মুর্শিদাবাদের ডোমকলের পর নরেন্দ্রপুর। বুধবার রাতে নরেন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত আর্যনগরে এসআই পদমর্যাদার এক পুলিস অফিসারকে ধারাল অস্ত্রের কোপ মারার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তি ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে। আক্রান্তের সঙ্গে থাকা বাকি পুলিস সঙ্গীরা শান্তনু ব্যাধ নামে ওই অফিসারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এই ঘটনায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিস।
জানা গিয়েছে, নীলরতন পাল, সৌম্য পাল, শ্যামল পালের নামে ২০২২ সালে পাড়ায় একটি মারামারি করার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল। থানায় দায়ের হয় এফআইআর। কিন্তু সেই মামলায় আদালতে হাজিরা দিচ্ছিলেন না কেউই। বারেবারে রিমাইন্ডার দেওয়া হলেও, তারা কেউই তাতে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত বারুইপুর মহকুমা আদালত তিনজনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। সেটা কার্যকর করতে বুধবার রাতে পাল বাড়িতে হাজির হয় পুলিস। প্রথমে বাইরে থেকে ডাকাডাকি করা হয়। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। আদালতের ওয়ারেন্ট কার্যকর করতে পুলিস এসেছে, সেটাও বুঝিয়ে বলা হয়। লাভ হয়নি। এরপরই বাধ্য হয়ে বলপূর্বক দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে পুলিস। অভিযোগ, ঢুকতেই তাদের উপর বটি ও দা নিয়ে হামলা করে নীলরতনবাবু ও তার দুই ছেলে। প্রথম কোপটি শান্তনুবাবুর কনুইয়ে লাগে। দ্বিতীয়টি পিঠে। তবে ক্ষত গভীর না হওয়ায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। এরপরই বাকি সঙ্গীরা তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে আনে এবং তৎক্ষণাৎ বাবা ও দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করে। শান্তনুবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিসের উপর হামলার স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বারুইপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পাঁচ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে পুলিস সূত্রে খবর, যে সমস্ত ওয়ারেন্ট কার্যকর হয়নি, সেগুলি নিয়ে পদক্ষেপ করতে আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মত বিভিন্ন অপরাধীদের ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিস। আর তার মধ্যেই বাবা ও দুই ছেলেকে ধরতে গেলে পাল্টা উর্দিধারীদের উপরই চড়াও হয় তারা। বারুইপুর পুলিস জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, আমাদের চারজন অফিসার আসামীদের ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ওই পরিবারের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। আঘাত গুরুতর নয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
এদিকে, পুলিসের বিরুদ্ধেই পাল্টা অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে নিজেদের দোষ ঢাকতে চাইছে পাল পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, পুলিস তাদের সঙ্গে অভব্য আচরণের পাশাপাশি মারধর করেছে। তাতে বাধা দিতে গেলে আহত হয়েছেন ওই অফিসার। যদিও এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি পুলিস সুপারের।