রয়েছে ‘বিপজ্জনক’ বোর্ড, নির্দেশ উড়িয়ে মহম্মদ আলি পার্কে দেদার খেলা ও আড্ডা
বর্তমান | ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বড় আকারে দেওয়া ‘বিপজ্জনক’ পোস্টার। মাঠের মধ্যিখানে হলুদ রঙের লোহার বোর্ডে কালো অক্ষরে ইংরেজিতে সে নির্দেশ লেখা রয়েছে। সেই নির্দেশ উড়িয়ে মহম্মদ আলি পার্কের ভিতর চলছে খেলাধুলো, আড্ডা, বিশ্রাম। কয়েক বছর আগে এই পার্কের ভিতর ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। পার্কের নীচের অংশে কলকাতা পুরসভার জলাধার রয়েছে। তার উপরিভাগ বা ছাদের হাল ভালো নয়। মাঠের উপরের অংশের বাড়তি ওজন পড়লে জলাধারের ছাদ ভেঙে যেতে পারে। তাই যে কোনও ধরনের বিপর্যয় এড়াতে এই পার্কের ভিতর ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু তারপরও নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে পার্কের ভিতরে প্রবেশ চলছেই।
মহম্মদ আলি পার্ক লাগোয়া রয়েছে পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের অফিস। সেখানে নিয়মিত অফিসারও বসেন। সম্প্রতি পার্কে গিয়ে দেখা গিয়েছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের দিকে পার্কের মূল প্রবেশপথে তালা ঝুলছে। ডান হাতের রাস্তা দিয়ে পার্কের পিছনের দিকে যেতে গেলে দেখা যাবে, পাশের গেটও বন্ধ। কিন্তু পার্কের পিছনের গেট খোলা। তার পাশেই রয়েছে পুরসভার অফিস ঘর। পিছনের দিকের সেই খোলা গেট দিয়েই মহম্মদ আলি পার্কে ঢুকছেন লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দারা নিয়মিত পার্কের ভিতর যাওয়া-আসা করছেন। মাঠের মধ্যে ক্রিকেট এবং ফুটবল খেলা হচ্ছে। ভিতরে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন বয়স্করা। চলছে তাস পেটানো।
যে মাঠ বিপজ্জনক, প্রবেশ নিষিদ্ধ সেখানে কীভাবে মিলছে ঢোকার অনুমতি? বন্ধ থাকা গেট কেন খোলা? স্বাভাবিকভাবেই এই সব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গত কয়েক বছর ধরেই এই পার্কের ভিতর মাঠের উপর পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পার্কের তলায় রয়েছে পানীয় জলের রিজার্ভার। যেটির হাল খুব খারাপ। পার্কের ভিতর কেউ ঢুকলে কিংবা মাঠের উপর ভিড় হলে মাটিতে চাপ পড়বে। ছেলেরা খেলতে খেলতে মাঠের উপর দৌড়দৌড়ি করলে যে কোনও সময় মাটি বসে গিয়ে ছাদ ভেঙে জলাধারে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই বিষয়টি নিয়ে পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে ১০ মিটার ভিতর পর্যন্ত মহম্মদ আলি পার্কে জলাধার নেই। তারপর প্রায় গোটা মাঠজুড়েই সাড়ে চার হাজার ৫০০ মিলিয়ন গ্যালনের জলাধার। মাঠের ভিতর ঢোকা উচিত হচ্ছে না। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। প্রবেশ না করার বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার।