শীতকালে একটু তাড়াতাড়ি সন্ধ্যা হয়। তখন প্রায় পৌনে পাঁচটা হবে। সন্ধ্যা না নামলেও আলো কমে আসছিল। কোনও কাজ না থাকায় জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দূরে দেখতে পাই একটি প্রিজ়ন ভ্যান আসছে। কোনও গুরুত্ব দিইনি। আমার কিছুটা আগে এসে উল্টোদিকে থামল ভ্যানটি। তখনও কোনও ভ্রুক্ষেপ করিনি।
এক ঝলক দেখলাম, ভ্যনের দরজা খুলে কয়েকজন নামছে। আচমকাই পরপর গুলির আওয়াজ শুনে চমকে যাই। কী হয়েছে, কোথায় গুলি চলল, এই সব ভাবনা মাথায় আসতেই দেখি দুই পুলিশ কর্মী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছটফট করছেন। আশপাশের অধিকাংশ লোকজনই ভয়ে ছুটে পালাচ্ছে। আমিও এলাকা ছেড়ে সরে পড়ার তাল করছিলাম। তখন আবার ওই দুই পুলিশ কর্মীর দিকে চোখ গেল। দেখলাম, একই ভাবে তাঁরা পড়ে রয়েছেন। তখন আর পালিয়ে যাওয়ার মন করল না। আস্তে আস্তে তাঁদের দিকে এগিয়ে গেলাম। ততক্ষণে আরও কয়েকজন সেখানে এসে গিয়েছেন।
ওই অবস্থাতেই পুলিশ দু’জন বলেন, ‘আমাদের গুলি করে এক আসামী পালিয়ে গিয়েছে।’ তাড়াতাড়ি কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জনা তাঁরা আর্জি জানান। তখন আমরা ঠিক করি এ ভাবে ফেলে রাখলে দু’জনই মারা যাবেন। তাই কিছু করা দরকার। সৌভাগ্যক্রমে তখনই জাতীয় সড়ক দিয়ে একটি ফাঁকা অ্যাম্বুল্যান্স আসছিল। সেটিকে দাঁড় করিয়ে গুলিবিদ্ধ ওই দুই পুলিশকে ইসলামপুর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। বাড়ি ফিরে এসে পরিবারের লোকদের ঘটনা সব খুলে বলি।
এরপর টিভি খুলতেই দেখি ব্রেকিং নিউজ। তখন পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হয়। তবে আমি কাউকে পালিয়ে যেতে দেখিনি। হতে পারে, খেয়াল না করায় আমার চোখে পড়েনি। তবে বেশ ভয় ভয় করছে। পুলিশই যদি এইভাবে আক্রান্ত হয়,তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়।
তনবির আলম (প্রত্যক্ষদর্শী)