মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই কোতোয়ালি থানায় এফআইআর করা হয়। শুক্রবার সকালেই পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার গ্রহণ করে CID। সাসপেন্ডেড চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন সিআইডি-র গোয়েন্দারা। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘আমরা FIR কপি সিআইডি-র হাতে তুলে দিয়েছি।’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ১৯৮, ১০৫, ১২৫ (বি) বিএনএস ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে মামনি রুইদাস নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর পর স্যালাইন নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ উঠে আসে। আরও তিন প্রসূতির চিকিৎসা চলছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তের পর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।
যদিও অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সাসপেনশনের প্রতিবাদে শুক্রবার আংশিক কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এ দিন বিকেলেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের প্রতিনিধিদের। এর পরেই পূর্ণ কর্মবিরতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দুই মেদিনীপুর জেলার প্রচুর রোগী প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন। সে ক্ষেত্রে জুনিয়র ডাক্তাররা পূর্ণ কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিলে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রশ্নের মুখে পড়বে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, ‘যা বলার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। সেই অনুযায়ী নিয়ম মেনে সবকিছু হবে। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই। তবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পরিষেবা স্বাভাবিক আছে বলে শুনেছি।’ জুনিয়র ডাক্তারদের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা এখনই পূর্ণ কর্মবিরতি করছি না। বিকেল পর্যন্ত সমস্ত পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত জানাব।’
জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়াতে কলকাতা থেকে পৌঁছেছেন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম এবং নার্সেস ইউনিটি'র প্রতিনিধিরা। নার্সেস ইউনিটির তরফে ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে চিকিৎসক ও রোগীদের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হলো। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি। আমরা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে আছি।’ অবিলম্বে সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছে দু’টি সংগঠন।