এই সময়: বিজেপিতে সুবক্তার অভাব নেই। তবে ‘নির্বাচিত বক্তৃতা সংকলন’ ছাপা হচ্ছে শুধু নরেন্দ্র মোদীর–ই। চলতি মাসেই ‘শ্যামাপ্রসাদ রিসার্চ ফাউন্ডেশন’–এর উদ্যোগে বইটি প্রকাশ পাবে। মোদীর ‘বক্তৃতা সংকলন’ উদ্বোধন করতে ২২ জানুয়ারি কলকাতায় আসছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বাংলার একশোজন বিশিষ্ট মানুষের বাড়িতে সেই বই পৌঁছে দেবেন বিজেপি নেতারা।
গত লোকসভা ভোটে গোটা দেশেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার বাঁচিয়ে রাখতে পারলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন মোদী। তার পর থেকেই ঘরে–বাইরে নানারকম চাপের সম্মুখীন হতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
এমনকী, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)–এর সুপ্রিমো মোহন ভাগবতও আকার–ইঙ্গিতে মোদীর ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও মোদী–ব্রিগেডের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। বিজেপির অন্দরে মোদীর পায়ের তলার মাটি কিছুটা হলেও নড়বড়ে।
কিন্তু তাতে কী?
বিজেপির সিংহভাগ নেতাই মনে করেন, এখনও মোদীর বিকল্প মুখ তাঁদের দলে তৈরি হয়নি। তাই দেশের কোনও রাজ্যে বিধানসভা ভোট এলে মোদী সেখানে কতগুলি জনসভা করছেন, তা নিয়েই চর্চা হয় বেশি। বঙ্গ–বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘ভোটের ফলাফলে মোদীজি একটু বেকায়দায় পড়েছেন। কিন্তু সিংহ তো সিংহ–ই হয়। শুধু বিজেপিতে কেন, দেশের কোনও রাজনীতিক–ই ওঁর ধারেকাছে আসেন না। তাই তাঁর বক্তৃতার সংকলন ছাপা হচ্ছে। আমাদের দলে তো আরও অনেক নেতা আছেন। কই তাঁদের বক্তৃতার সংকলন করার কথা তো পার্টি অথবা পার্টি ঘনিষ্ঠ কোনও সংস্থা ভাবছে না।’
২০১৩ থেকে মোদীর ভাষণগুলির মধ্যে বাছাই করা ৫৮টি বক্তৃতা নিয়ে এই সংকলন তৈরি হচ্ছে। মোদীর বক্তৃতা বাংলায় অনুবাদ করে বইটি লিখেছেন রাজ্য–বিজেপির সহ–সভাপতি রথীন বসু। বিজেপি সূত্রের খবর, বাংলা ভাষায় প্রথম এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও অদূর ভবিষ্যতে অন্যান্য ভাষাতেও মোদীর ‘নির্বাচিত বক্তৃতা সংকলন’ ছাপা হবে।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘মোদীজির যে বক্তৃতাগুলি বিজেপি কর্মীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং আগামীতে রাজনৈতিক দলিল হিসেবে থেকে যাবে, মূলত সেগুলিই সংকলনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।’ বিজেপির এই উদ্যোগকে খোঁচা দিয়ে এক তৃণমূল নেতার টিপ্পনি, ‘গত বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নিয়ম করে বলতেন, আব কি বার ২০০ পার। সেই ভবিষ্যদ্বাণীগুলিও যেন ওই সংকলনে থাকে।’