টাকার বিনিময়ে আবাসের তালিকায় অযোগ্যদের নাম! ব্লক অফিসের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে বিডিও-র এফআইআর...
আজকাল | ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: টাকার বিনিময়ে আবাস যোজনায় প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম-পদবি বদলে অযোগ্যদের নাম তালিকায় তুলে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আগেই উঠেছিল। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলতেই কড়া ব্যবস্থা নিলেন বিডিও। ব্লক অফিসের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে তিনি এফআইআর দায়ের করলেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। অভিযুক্ত দুই কর্মীর নাম সঞ্জয় বসু ও বিশ্বজিৎ মিত্র।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থ বর্ষে আবাস যোজনায় ঘরের জন্য বনগাঁ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। সেই মতো ব্লকের আধিকারিকরা বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে সমীক্ষা করেছিলেন। পরবর্তীকালে যোগ্য আবেদনকারীদের নাম আবাস যোজনার তালিকায় প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তালিকাভুক্ত উপভোক্তারা আবাস যোজনার ঘরের টাকা পাননি। খোঁজখবর নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের নাম ব্যবহার করা হলেও আবাস যোজনা টাকা অন্য ব্যক্তিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। কোথাও কোথাও আবার নামের পদবি সামান্য রদবদল করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নাম ঠিক রেখে অন্য পঞ্চায়েতের বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই উপভোক্তারা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন।
পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগের তদন্ত করা হয়। দেখা যায়, গোপালনগর, কালুপুর, গঙ্গানগর ও চৌবেড়িয়া পঞ্চায়েতের উপভোক্তারাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছেন। আর গোটা দুর্নীতিটি সংগঠিত হয়েছে ব্লক অফিসের কয়েকজন কর্মীর মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে দু'জনকে ব্লক প্রশাসন শনাক্ত করে। তাঁদের নাম সঞ্জয় বসু ও বিশ্বজিৎ মিত্র। বনগাঁর বিডিও কৃষ্ণেন্দু ঘোষ ওই দু'জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বনগাঁ উত্তরের প্রাক্তন বিধায়ক এবং তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, 'গরিব মানুষের জন্য আবাস যোজনার ঘরগুলো বরাদ্দ হয়েছে। অভিযোগ পাচ্ছিলাম, প্রকৃত উপভোক্তাদের পদবি বদল করে অযোগ্যদের নাম তালিকায় ঢোকানো হচ্ছিল। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ প্রথমে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। পরে বিষয়টি আমি জেলাশাসককে জানিয়েছিলাম। তারপর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। তাতে দেখা যায়, ব্লক অফিসের দুই কর্মী উপভোক্তাদের নামের পদবি বদল করে অযোগ্যদের নাম সেই তালিকায় ঢুকিয়েছেন। বিডিও ওই দু'জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন।'
অভিযুক্ত সঞ্জয় বসু বলেন, 'আবাস যোজনার তালিকা তৈরীর কাজ করার আগে আমাদের কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল, আমাদের সার্ভে করার পর আবার সার্ভে করা হবে। জানি না কোথায় অনিয়ম হয়েছে।' বিশ্বজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
থানায় অভিযোগ দায়ের পর পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত দুই কর্মীকে থানায় ডেকে পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।