পেটের টানে গভীর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যাওয়াই কাল, সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যু ব্যক্তির
প্রতিদিন | ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুন্দরবনের মৈপীঠের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে বাঘের আনাগোনা বেশ কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে। ঘটনায় মানুষজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর মধ্যেই এবার বাঘের হানায় মৃত্যু সুন্দরবনে। কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মারা গেলেন এক ব্যক্তি। মৃত ব্যক্তির নাম অজয় সর্দার(৫১), বাড়ি কাঁটামারি গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ৫১-এর অজয় সর্দার দুই সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের গভীরে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনভর তিনজন নৌকা করে পীরখালির জঙ্গলের একাধিক খাঁড়িতে ঘোরাফেরা করেন। বিকেলে কাঁকড়া ধরা শেষে জঙ্গলের খাঁড়ি থেকে নদীর উদ্দেশ্যে নৌকা বার করছিলেন তাঁরা। জঙ্গলের দিকে পিঠ দিয়ে নৌকায় বসেছিলেন অজয়। সেসময় একটি বাঘ চুপিসাড়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে তাঁর উপর হামলা চালায়।
কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ঘাড় কামড়ে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। ঘটনায় শুরুতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন নৌকায় থাকা অন্য দুই সঙ্গী কালাচাঁদ সর্দার ও কার্তিক সর্দার। পরে তাঁরা লাঠি, বৈঠা নিয়ে ওই বাঘটিকে তাড়া করেন। তাঁদের তাড়ায় শিকার ফেলে বাঘটি বনের ভিতর ঢুকে যায়। রক্তাক্ত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নৌকায় চাপিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন দুজন। যদিও তাঁকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকালে কাঁটামারি ঘাটে মৃতদেহ নিয়ে পৌঁছন তাঁরা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই গ্রামে শোকের ছায়া নামে।
মৃত অজয়বাবুর স্ত্রী সরস্বতী সর্দার বলেন, “কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার সময় সন্তানদের নিয়ে সাবধানে থাকার জন্য বলে গিয়েছিলেন। পরে জানানো হয়, ওনার শরীর খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বাড়ি এসে দেখি উঠানে শোয়ানো রয়েছে।” খবর দেওয়া হয় কুলতল থানায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। বনের ভিতর ঢোকার জন্য তাঁদের কোনও অনুমতিপত্র ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।