গ্রাম ঘিরে নিয়ে রাতভর অভিযান, সীমান্তে এনকাউন্টারে খতম সাজ্জাক আলম
আজকাল | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুলিশের এনকাউন্টারে খতম পাঞ্জিপাড়াকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সাজ্জাক আলম। পুলিশের দাবি, গোয়ালপোখর থানার সাহাপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীপুরে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল সাজ্জাক। সেই সময় তিন রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের গুলি গিয়ে লাগে সাজ্জাকের গায়ে। জখম অবস্থায় তাকে লোধন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশের উপর গুলি চালানোর ঘটনার পর রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক রাজীব কুমার উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। কথা হয়েছিল উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে। তারপরই সরাসরি অ্যাকশনে নামে পুলিশ। দুই পুলিশকর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় রাজ্য পুলিশ। অভিযুক্ত দু’জনের মধ্যে একজনের বাংলাদেশ যোগ প্রকাশ্যে আসায় পুলিশ আরও তৎপর হয়ে ওঠে। সেইমতো পরিকল্পনা করা হয়।
এটা ঘটনা, সম্প্রতি পাঞ্জিপাড়া থানার অধীন ইকরচলা কালীবাড়ি এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। ইসলামপুর কোর্ট থেকে পুলিশের গাড়িতে করে খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাক আলমকে রায়গঞ্জে যাওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হন দুই পুলিশকর্মী। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রায়গঞ্জ থানার পুলিশ কয়েকজন আসামিকে নিয়ে ইসলামপুর আদালত থেকে রায়গঞ্জের উদ্দেশে যাচ্ছিল। সেই সময় করণদিঘির খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাক আলম শৌচাগারে যেতে চেয়ে গাড়ি থামানোর অনুরোধ করে পুলিশকে। একাধিকবার অনুরোধের পর পুলিশ পাঞ্জিপাড়ার কাছে গাড়ি থামিয়ে সাজ্জাককে শৌচকর্ম করতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফেরত আসার সময় দুই পুলিশকর্মী নীলকান্ত সরকার ও দেবেন বৈশ্যর উপর বন্দুক নিয়ে হামলা হয় বলে অভিযোগ। জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দুই পুলিশকর্মী। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় সাজ্জাক। সেই থেকে সাজ্জাকের খোঁজ শুরু হয়। এই ঘটনায় সামনে আসে বিস্ফোরক তথ্য। জানা যায়, যে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে হামলা চালিয়ে দুই পুলিশকর্মীকে জখম করা হয়েছিল সেই আগ্নেয়াস্ত্র ইসলামপুর কোর্ট লক আপেই অভিযুক্তের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে নিয়েই পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে ওঠে সাজ্জাক আলম। পরে রাস্তায় শৌচাগারে যাওয়ার জন্য গাড়ি দাঁড় করাতে পুলিশকে কার্যত বাধ্য করে সে। শেষ পর্যন্ত গুলি চালিয়ে সে পালিয়ে যায়। তদন্তে উঠে আসে আবদুল হোসেনের নাম। এই ব্যক্তিই সাজ্জাককে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল বলে খবর। দু’জনের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সাজ্জাক ও আবদুলকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয় পুলিশের তরফে। পুলিশ সূত্রের খবর, সাজ্জাকের খোঁজে একাধিক টিম তল্লাশিতে নেমেছিল। নজর রাখা হচ্ছিল সিসিটিভিতেও। তিনটি গ্রামকে শুক্রবার রাতে পুলিশ ঘিরে নেয়। এরপরই সাজ্জাকের গতিবিধি জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তবে ফের পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।