• চলতি বছরে ভর্তি হয়নি কোনও পড়ুয়া, চরম সঙ্কটে আদরপাড়া প্রাথমিক
    বর্তমান | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চলতি বছরে একজন পড়ুয়াও ভর্তি হয়নি। কমতে কমতে সাকুল্যে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দশজন। তাও আবার সবদিন সবাই আসে না। কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল নয়, এই ছবি জলপাইগুড়ি শহরের আদরপাড়া দক্ষিণেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শুক্রবার স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, মাত্র তিনজন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে আস্ত একটা সরকারি প্রাথমিক স্কুল। শিক্ষকদের দাবি, আরও দু’জন পড়ুয়া এদিন স্কুলে এসেছে। নথিপত্র সংক্রান্ত কাজে তাদের বাইরে নিয়ে গিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা।


    খাতায়কলমে দশজন পড়ুয়ার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন চারজন। কিন্তু, শহরের বুকে স্কুলের এমন হাল কেন? সহ শিক্ষিকা পিয়ালি নিয়োগীর উত্তর, কী করব? আমি তো পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছি, তবুও পড়ুয়া জোগাড় করতে পারিনি। আমাদের স্কুল লাগোয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। সেখান থেকেই আমাদের স্কুলে ছাত্রছাত্রী আসার কথা। কিন্তু সবাই শহরের বড় স্কুলে চলে যাচ্ছে। যেসব স্কুলে প্রাথমিকের সঙ্গে হাইস্কুল রয়েছে, সেখানেই ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানোর ঝোঁক রয়েছে অভিভাবকদের।


    স্কুলের অপর সহ শিক্ষক অনিন্দ্য দাসরায় বলেন, জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশ বন্ধ না হলে আমাদের স্কুল টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে। অনেক কষ্ট করে খুঁজে আমরা একজন পড়ুয়াকে ধরে আনছি। কয়েকদিন পরই দেখা যাচ্ছে, সেই পড়ুয়ার অভিভাবক কোনও  জনপ্রতিনিধিকে দিয়ে শহরের বড় স্কুলে ভর্তির সুপারিশ করিয়ে আনছেন। তারপর আমাদের স্কুল থেকে পড়ুয়াকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এরই জেরে ফি বছর স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে।


    আদরপাড়া দক্ষিণেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকে কোনও পড়ুয়া নেই। প্রথম শ্রেণিতে ৩ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে মাত্র একজন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৪ জন এবং চতুর্থ শ্রেণিতে ২জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, করোনাকালের আগে ২০১৯ সালে স্কুলে ৪৫ জন ছিল। তারপর থেকেই কমতে থাকে পড়ুয়া। ২০২৩ সালে ছাত্রছাত্রী এসে দাঁড়ায় ২৭। গতবছর তা কমে হয় ১৬। আর এবছর দশ। এভাবে কতদিন স্কুল চলবে, তা নিয়ে সংশয়ে শিক্ষকরাই। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, যেসব প্রাথমিকের সঙ্গে হাইস্কুল রয়েছে, তারা যাতে বাড়তি পড়ুয়া ভর্তি না নেয়, সেব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকে একশোর বেশি পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)